reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

সরকার গঠন করতে পারলে অগ্নিসন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে : তথ্যমন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২০১৩-১৪ সালে খালেদা জিয়া আর এখন তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এই আগুনসন্ত্রাস চলছে। কেউ কেউ ওদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য বিবৃতি দেয়। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা হয় না। তিনি বলেন, ‘জনগণের রায়ে আমরা যদি সরকার গঠন করতে পারি, শেষ আগুনসন্ত্রাসীকেও নির্মূল করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এদেরকে নির্মূল করা না গেলে দেশে শান্তি স্থাপন করা যাবে না।’

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক মানুষ পোড়ানোর প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে’ মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ নামে একটি সংগঠন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তথমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আমার বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমি প্রশ্ন করেছি, পৃথিবীর কোথাও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পেট্রোল বোমা, মানুষ হত্যা হচ্ছে কিনা। তারপর তিনি স্বীকার করেছেন, গত ২০ বছরে পৃথিবীর কোথাও এরকম কিছু ঘটেনি।’

‘মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি যারা করে, তারা দেশ, জাতি ও সমাজের শত্রু’, উল্লেখ করে অগ্নিসন্ত্রাসের মূলোৎপাটনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এদের অর্থদাতা, হুকুমদাতা, মদদদাতাদের ধরতে হবে। তাদের বিচার করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত নেতাদের অর্থে, হুকুমে, মদদে এ হত্যা চলছে। এদের বিচার না হলে এই আগুনসন্ত্রাস বন্ধ হবে না।’

মন্ত্রী বিএনপির কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এই মানুষের আর্তনাদ কি আপনাদের কানে পৌঁছায় না? আসলে কয়লা ধুইলে যেমন ময়লা যায় না, কুকুরের লেজ যেমন সোজা হয় না, তেমন বিএনপি-জামায়াতও কখনও ভালো হবে না। সুতরাং, এদের নির্মূল করতে হবে।’

এ সময় সংহতি জানিয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘হত্যা-সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিএনপির সৃষ্টি হয়েছে। খালেদা জিয়া একই কাজ চালিয়ে গেছে, এখনও একই প্রক্রিয়া তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের রক্তে সন্ত্রাস মিশে আছে। তারা দেশকে আবারও পাকিস্তানি-তালেলিবানি রাষ্ট্র বানাতে চায়।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধে ভবিষ্যতে নতুন আইন করা ও ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান ২০১৩-১৪ সালে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে প্রচলিত আইনেই ব্যবস্থার আওতায় আনার দাবি জানান।

মানববন্ধনে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ সংগঠনের আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বাবুলের সঞ্চালনায় ২০১৩-১৫ সালে পেট্রোল বোমায় আহত-নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।

অগ্নিদগ্ধে নিহত আলমগীর হোসেন শিমুলের সন্তান জাফর হোসেন বলেন, ‘২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর আমার বাবার গাড়ির ওপর পেট্রোল বোমা মারা হয়। তারপর তাকে হত্যা করা হয়। আমাদের মাথার ওপরের ছাঁয়া নেই ১০ বছর। অথচ হত্যাকারীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আজ মানবতার কথা বলে বিএনপি, আমাদের মানবতার বিচার কে করবে।’

আগুনসন্ত্রাসের শিকার লিটন মিয়া বলেন, ‘সেদিন ছিল শুক্রবার। চানখারপুল থেকে লেগুনায় ওঠার পর ককটেলের বিস্ফোরণে ভেতরে থাকা ১৩ জন আহত হই। গাড়িতে আগুন ধরে যায়। আমরা তো রাজনীতি করি না। আমরা কী অপরাধ ছিল। আমাদের দোষ, আমরা খেটে খাই। এখন পর্যন্ত এ ঘটনার বিচার হয়নি। তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’

পেট্রোল বোমায় স্বামী-সন্তান হারানো মাশরুহা বেগম বলেন, ‘২০১৫ সালে স্বামী ও কোলের শিশু মাইশা নাহিয়ানকে নিয়ে বাসে করে যাচ্ছিলাম। পেট্রোল বোমায় চলন্ত বাসে দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়। আমার স্বামী ধাক্কা দিয়ে আমাকে জানালা দিয়ে ফেলে দেন। কিন্তু চোখের সামনে স্বামী ও সন্তানকে হারাই। আমার বেঁচে থাকা দুঃস্বপ্নের মতো, এটাকে কি বেঁচে থাকা বলে? এভাবে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারবেন না, এভাবে পরিবারকে পঙ্গু করে মারবেন না।’

এ ছাড়া জমির আলী, জাহেদুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁওয়ের রফিক, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খাদিজা নাসরীন, নিহত নাহিদের মা রুনী বেগম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
তথ্যমন্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close