নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ নভেম্বর, ২০২৩

নৌকার মাঝি ঠিক করা শুরু আজ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছে আওয়ামী লীগ। বেলা ১১টায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শুরু হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার প্রথম দিনে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সংসদীয় আসনগুলোর মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে এ সভায় ২৯১ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। কারণ ৩০০ আসনের মধ্যে ৮ আসনে একক নেতার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই আসনগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওই আসনগুলো হচ্ছে গোপালগঞ্জ-৩, গোপালগঞ্জ-২ বাগেরহাট-১ বাগেরহাট-২, বরিশাল-১, খুলনা-২, মাদারীপুর-১ ও নারায়ণগঞ্জ-৪।

সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে গোপালগঞ্জ-৩ ও রংপুর-৬ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দলটির নেতারা। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ-৩ আসনের জন্য অন্য কেউ নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়ে ফরম তোলেননি। একই তালিকায় রয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন ও শেখ তন্ময়। এসব নেতার আসনে আর কোনো প্রার্থী নৌকার মনোনয়নের প্রত্যাশায় ফরম সংগ্রহ করেননি। ফলে এই ৮ আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির কাজ গত মঙ্গলবার শেষ করেছে আওয়ামী লীগ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলটির সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে। এই সেই সভায় চূড়ান্ত হবে, কে হবে কোন আসনের নৌকার মাঝি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের অন্তত ডজনখানেক মনোনয়নপ্রত্যাশী একান্ত আলাপচারিতায় বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি ও তাদের সঙ্গী দলগুলো। কার্যত আওয়ামী লীগ ও দলটির মিত্র দলগুলো নির্বাচন করেছে। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন প্রার্থী জয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনও সেই অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। এবারের নির্বাচনও এই বৃত্তের দিকেই এগোচ্ছে বলে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে।

তাদের মতে, গত দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের টার্গেট ছিল নৌকার টিকিট নিশ্চিত করা। নৌকার প্রার্থী হতে পারলেই সংসদ সদস্য হওয়া অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। এবারের নির্বাচনও বিএনপিবিহীন হওয়ার নৌকার মনোনয়ন পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এই তালিকায় ক্রীড়া, বিনোদনসহ বিভিন্ন অঙ্গনের কয়েকজন তারকাও নাম লিখিয়েছেন এবং লেখাবেন। ১৪ দলের বেশির ভাগ শরিক দলও নৌকা প্রতীকে জোটগতভাবে ভোট করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে এরই মধ্যে।

তবে বিপুলসংখ্যক মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরম সংগ্রহ করায় শেষ পর্যন্ত নৌকার টিকিটের সোনার হরিণ কারা পাচ্ছেন, তা নিয়ে শঙ্কায় থাকার কথা জানিয়েছেন অনেকেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুুর রহমান বলেন, শনি ও রবিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের দিকে তাকিয়ে সহজে বোঝা গেছে নেতাকর্মীদের মধ্যে এবারের উচ্ছ্বাসটা কেমন। উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ফরম সংগ্রহ করছেন। এটি খুবই ইতিবাচক দিক। বিএনপি-জামায়াতের হুমকি-ধমকিতে কোনো লাভ হবে না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দেশের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনে ভোট দিতে চায়। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রিকে ঘিরে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নির্বাচনী ঢেউ তৈরি হয়েছে। আগের নির্বাচনগুলোর চেয়ে এবারের উচ্ছ্বাস আরো বেশি, এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক বলে আমরা মনে করি।

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আওয়ামী লীগ,মনোনয়ন ফরম বিক্রি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close