ইসরায়েলকে সমর্থন করায় মার্কিন সেনার পদত্যাগ
নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর 'গণহত্যা' চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ অবস্থায় দেশটিকে সমর্থন অব্যাহত রাখায় বাইডেন প্রশাসনের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে চাকরি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।
হ্যারিসন মান নামে ওই সেনা কর্মকর্তা সোমবার এ ঘোষণা দেন। খবর তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর।
দীর্ঘ সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান এই সংঘাতে সরাসরি ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গাজায় আগ্রাসন চালাতে ইসরায়েলকে অস্ত্রও সরবরাহ করে দেশটি। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নীরব। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই মার্কিন সেনা কর্মকর্তা।
পদত্যাগ করা সেনা কর্মকর্তা হ্যারিসন মান মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা।
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা হ্যারিসন মান তার পদত্যাগের চিঠি নিজেই প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ইসরায়েলকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অকুণ্ঠ ও নিঃশর্ত সমর্থন হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা ও অনাহারে রাখতে ভূমিকা রেখেছে।
সামরিক বাহিনীতে তার কাজ নিঃসন্দেহে সেই সমর্থনে অবদান রেখেছে বলে উল্লেখ করে মান বলেছেন, এটি আমাকে অবিশ্বাস্য লজ্জা দিয়েছে এবং এতে আমি অপরাধবোধ করছি। এই নিঃশর্ত সমর্থন ইসরায়েলকে আরও বেপরোয়া করে তুলেছে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতির প্রতিবাদে মার্কিন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতির বিরোধিতা করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরবি ভাষার মুখপাত্র হালা রাহারিত পদত্যাগ করেন। সেসময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিজেই নিশ্চিত করেন তিনি।
ওই পোস্টে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মানজনক পদে ১৮ বছর চাকরি করার পর ২০২৪ সালের এপ্রিলে আমি পদত্যাগ করেছি। গাজা ইস্যুতে মার্কিন সরকারের নীতিই এর কারণ।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, একসময় মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত সংস্থা দুবাই রিজিওনাল মিডিয়া হাবের উপপরিচালক ছিলেন হালা রাহারিত। এই সংস্থাটি আরব বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। তারপর ২০০৬ সালে রাজনৈতিক ও মানবাধিকার কর্মকর্তা এবং আরবি ভাষার মুখপাত্র হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগ দেন তিনি।
এর আগে গত মার্চ মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গাজা নীতির প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানবাধিকার কর্মকর্তা অ্যানেল শেলিন। মধ্যপ্রাচ্যের এই বিশ্লেষক মার্কিন সরকারের পক্ষে মানবাধিকার বিষয়ে প্রচারের পাশাপাশি এই সংক্রান্ত দায়িত্বও পালন করতেন।
শেলিনের পদত্যাগের আগে গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা জশ পল পদত্যাগ করেন। বাইডেনের গাজা নীতির প্রতিবাদে পদত্যাগ করা ওই কর্মকর্তা ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক কর্মকর্তা।
পিডিএস/এমএইউ