যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প উৎপাদন খাতে মন্দা, প্রভাব অর্থনীতিতে
সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বরে শ্লথ হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প উৎপাদন খাত। যার প্রভাবে উৎপাদন খাতে মন্দার আভাস পাওয়া যাচ্ছে দেশটিতে। অবশ্য উৎপাদন খাতের এই মন্দা যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক অর্থনীতিকে এখনই মন্দার মধ্যে ঠেলে দেবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে উৎপাদন খাতের সংকোচন অব্যাহত থাকলে তা দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নভেম্বরে মার্কিন কারখানাগুলোতে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ছিল আগের মাসগুলোর থেকে তুলনামূলক কম। এ ছাড়া কারখানাগুলোতে নতুন নিয়োগ তেমন একটা না হওয়ার পাশাপাশি কারখানা বন্ধ থাকার ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনা মার্কিন অর্থনীতির মন্থরতা নির্দেশ করছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট ফর সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট (আইএসএম)-এর গবেষণা তথ্যের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে দেশটির অর্থনীতিতে।
এ ব্যাপারে নিউইয়র্কের অর্থনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এফএইচএন ক্যাপিটালের বিশেষজ্ঞ উইল কমপারনোল রয়টার্সকে জানান, বিভিন্ন লক্ষ্মণ এবং অন্যান্য সমীক্ষা চতুর্থ প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির শ্লথগতির পূর্বাভাস দিচ্ছে।
আইএসএম জানিয়েছে, তাদের উৎপাদন খাতের পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেক্স বা পিএমআই সূচক গত মাসে ছিল ৪৬ দশমিক ৭, যা আগের মাসের অনুরূপ। গত ১৩ মাস ধরে টানা যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের পিএমআই সূচক ৫০-এর নিচে অবস্থান করছে। যা দেশটির উৎপাদন খাতের সংকোচনকে নির্দেশ করে।
অর্থনীতিবিদদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, পিএমআই ইনডেক্সের সূচক ৪৮ দশমিক ৭-এর কমে লম্বা সময় ধরে থাকা সার্বিক অর্থনীতির সংকোচন নির্দেশ করে। সবশেষ এত বেশি সময় ধরে দেশটির উৎপাদন খাতের সংকোচন দেখা দিয়ে ছিল প্রায় দুই যুগ আগে, ২০০০ সালের আগস্ট থেকে ২০০২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের এই মন্দা পরিস্থিতির খুব শিগগিরই উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
অবশ্য অনেক অর্থনীতিবিদ যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি নির্মাণ খাতে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া শ্রমিক আন্দোলন ও ধর্মঘটকে উৎপাদন খাতের সার্বিক শ্লথগতির জন্য দায়ী করেছেন। মাসজুড়ে চলা এই ধর্মঘট গত অক্টোবরে শেষ হলেও এর প্রভাব এখনো দেশটির অটোমোবাইল শিল্পে রয়ে গেছে।
আইএসএমের পিএমআই ইনডেক্স অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য, পানীয় ও তামাকশিল্পের পাশাপাশি পরিবহন যন্ত্রাংশ এবং অধাতব খনিজ উৎপাদনে দৃশ্যমান প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, তবে কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিকস, যন্ত্রপাতি, কাগজ শিল্প, গৃহস্থালিসামগ্রীসহ ১৪টি শিল্পখাতে উৎপাদন সংকুচিত হয়েছে।
পিডিএস/মীর