reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ মার্চ, ২০২৩

বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স

ছবি : সংগৃহীত

ফ্রান্সে সরকারি-আধাসরকারি ও বেসরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়স সংস্কারের যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, তার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়েছে দেশটিতে। শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাজধানী প্যারিসের প্লাসে দে লা কনকর্ড থেকে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

প্লাসে দে লা কনকর্ড ফ্রান্সের পার্লামেন্ট ভবনের কাছাকাছি। রাজধানী ছাড়াও দেশটির বোর্দো, তৌলন এবং স্ট্রাসবার্গ শহরে বিক্ষোভ চলছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ পেনশন পাওয়ার বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করতে বদ্ধপরিকর। প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। সেখানে বামপন্থি-সহ মাক্রোঁ-বিরোধীরা এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তা হারাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে মাক্রোঁ একের পর এক বৈঠক করতে থাকেন। তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, সরকার বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। ভোটাভুটি ছাড়াই পার্লামেন্টে বিল পাস করানো হবে। এমন সিদ্ধান্তে ফ্রান্স জুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।

প্রধানমন্ত্রী যখন পার্লামেন্টে এই ঘোষণা করছেন, তখন বামপন্থিরা স্লোগান দিতে থাকে, 'সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে'। কিছু এমপি খুব জোরে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেশনপ্রাপ্তদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করতে চায় না সরকার। তাই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এরপরই ট্রেড ইউনিয়নগুলো বিক্ষোভ তীব্র করার সিদ্ধান্ত নেয়। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছান। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এএফপি জানান, জনতা পার্লামেন্টের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বিক্ষোভভকারীদের দিকে পুলিশ কাঁদানে গ্য়াস ছোড়ে, জলকামান চালায়, বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জও করা হয়।

সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু ফ্রান্স ইনফোকে পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ২১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছয় হাজার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেয় বলে জানা গেছে। তারা রাস্তায় কাঠ ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরও মারে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফ্রান্সের অন্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

রাজকোষে যাতে আরো অর্থ আসে তার ব্যবস্থা করার জন্য মাক্রোঁ পেনশন পাওয়ার বয়স আরো দুই বছর বাড়াতে চাইছেন। সরকারি সূত্রের দাবি, এই ব্যবস্থা না নিলে আর্থিক পরিস্থিতি সামলানো যাবে না। সরকার ঘাটতি সামলাতে পারবে না।

কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, এটা সরকারের নীতির ব্যর্থতা। সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এই প্রস্তাবের বিরোধী। ইউনিয়নগুলো এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে একদিনের ধর্মঘটের ডাক দিচ্ছে। সরকার সিদ্ধান্ত বদল না করলে তারা ২৩ মার্চ ধর্মঘট পালন করবে।

পার্লামেন্টে এখন মাক্রোঁর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। বিল পাস করার জন্য তাদের রক্ষণশীলদের ভরসায় থাকতে হয়। রক্ষণশীলরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। বামপন্থিরা বিরোধী। তাই বিল পাস করাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন মাক্রোঁ। সেজন্যই তিনি বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ফ্রান্স,পেনশন,বয়স,বিক্ষোভ,লাঠিচার্জ,প্যারিস
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close