পবিপ্রবি প্রতিনিধি

  ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

নিয়োগ বাতিল দাবি

পবিপ্রবি ভিসি-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) সেকশন কর্মকর্তা নিয়োগ বাতিল চেয়ে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ইসরাত জাহান অনি নামে এক ভুক্তভোগী।

২৭ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) পটুয়াখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলাটি করা হয়। বাদী পক্ষের আইনজীবী হুমায়ূন কবির বাদশা এ তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমার বাদী (ভুক্তভোগী) আদালতে মামলা করেন এবং আদালত সমন নোটিশ ইস্যু করেছেন।’

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত, রেজিস্ট্রার (অ. দা.) অধ্যাপক সন্তোষ কুমার বসু, ট্রেজারার অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফিসর কাজী শহিদুল্লাহ।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর তিনজনসহ অন্যান্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তর। সেকশন কর্মকর্তা পদের জন্য ঢাকার বাসিন্দা ইসরাত জাহান অনি (মামলার বাদী) আবেদন করেন। ফলে ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর বাদীকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হলে তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সাক্ষাৎকার দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষক কর্মকর্তা পদে বাছাইয়ের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করে। যা বিধিবহির্ভূত বলে বিবরণে উল্লেখ করা হয়।


  • নিয়োগ বোর্ডের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ
  • বিভিন্ন পদে নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও টাকা লেনদেন

এ ছাড়া নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ বোর্ড কমিটির চেয়ারম্যান উপাচার্য হওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান হন ট্রেজারার অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী এবং রেজিস্ট্রার কামরুল ইসলামকে বাদ দিয়ে রেজিস্ট্রার (অ. দা.) অধ্যাপক সন্তোষ কুমার বসুকে সদস্য সচিব এবং অধ্যাপক পূর্ণেন্দু বিশ্বাসকে রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য করা হয়।

পরে ২০২৩ সালের ১, ২, ৪ ও ৭ নভেম্বর নিয়ম বহির্ভূতভাবে দুটি বাছাই বোর্ড কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের ছেলে শাওন চন্দ্র সামন্ত তনু, উপ-রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন বাদলের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা, পবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েলের ভাই আরিফুর রহমান পিয়েল, শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের ভাই হাফিজুর রহমান, দুমকি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালামের ছেলে তানভীর হাসান স্বাধীন ও জেলা যুবলীগের সম্পাদকের স্ত্রী তাকছিনা নাজনীনকে সুপারিশ করে।

গত বছরের ২ ডিসেম্বর রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থাপনের মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয় এবং সেকশন কর্মকর্তা পদে বিজ্ঞপ্তিতে ৩ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও বাছাই বোর্ড ৬ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে। পরে ৩ ডিসেম্বর নিয়োগপ্রাপ্তদের ডাক্তারি পরীক্ষার কথা থাকলেও ওই দিনই তারা যোগদান করেন।

বিবরণে আরো বলা হয়, সেকশন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও টাকা লেনদেনের গুঞ্জন রয়েছে। এজাহারে সেকশন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য পদের নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবির অভিযুক্ত রেজিস্ট্রার (অ. দা.) অধ্যাপক সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ‘এখনো কোন কাগজপত্র পাইনি।’

এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে পবিপ্রবিতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে উপাচার্যের ছেলেসহ ৫৮ জনকে নিয়োগের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পবিপ্রবি,মামলা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close