আকিক তানজিল জিহান, বশেমুরবিপ্রবি

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থী

ফি দিয়েও ইন্টারনেট ও কম্পিউটার সেবা বঞ্চিত

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ফি দিয়েও সেবা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। দুই একটা জায়গায় ছাড়া কোথাও ইন্টারনেট পাওয়া যায় না। এছাড়া লাইব্রেরিতে কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও সেখানে কম্পিউটারই নেই। পুরো ক্যাম্পাসে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট নিশ্চিত করাসহ কম্পিউটার ল্যাব পুনরায় চালু করার দাবি তাদের।

চলতি বছরের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্টারনেট খাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বরাদ্দ ছিল ৭ লাখ টাকা। পাঁচ বছর পর ২০২২-২৩ অর্থবছরে সেই বরাদ্দ প্রায় তিনগুণ বেড়ে ২৬ লাখ টাকা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৩ লাখ টাকা এবং ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ উভয় বছরেই ২৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ ছিল। এ হিসেবে গত ৫ বছরের ইন্টারনেট খাতে বরাদ্দ মোট অর্থের পরিমাণ ছিল ৯৬ লাখ টাকা।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমানে একাডেমিক, প্রশাসনিক ভবনসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা ডরমেটরি ও কোয়ার্টার, বিজয় দিবস হল, স্বাধীনতা দিবস হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, লাইব্রেরি, পোস্ট-ডক ডরমেটরি, তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীর কোয়ার্টার, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীর কোয়ার্টার, উপাচার্যের ভবন ও ক্যাফেটারিয়ায় ৪০০ এমবিপিএস (মেগাবিটস পার সেকেন্ডে) গতিসম্পন্ন ব্যান্ডউইথ ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে।

এদিকে ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ফি বাবদ প্রতি সেমিস্টারে ২০০ টাকা করে দিয়েও পর্যাপ্ত সেবা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট সেবা বলতে কিছুই নেই। লাইব্রেরিতে আগে যে কম্পিউটারগুলো ছিল, তাও চলত না। আর এখন তো কম্পিউটারই নেই। এছাড়া দুই একটা জায়গায় ছাড়া কোথাও ইন্টারনেট পাওয়া যায় না।


  • ক্যাম্পাসে ৪০০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেটের তথ্য থাকলেও, বাস্তবে কয়েক জায়গায় সামান্য সংযোগ মেলে।
  • লাইব্রেরিতে স্থান সংকুলানের অযুহাতে বন্ধ কম্পিউটার ল্যাব।
  • ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ফি বাবদ প্রতি সেমিস্টারে ২০০ টাকা দিতে হয় শিক্ষার্থীদের।
  • চলতি অর্থবছরে নতুন কোনো প্রস্তাবনা আসেনি বলে দাবি বাজেট কর্মকর্তার।

একাডেমিক ভবনের ৫ তলায় খুব সামান্য ইন্টারনেট সুবিধা পেলেও বাকি দশতলা পর্যন্ত কোনো ইন্টারনেট সুবিধা নেই। আবাসিক হলেও মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইন্টারনেট কিনে ব্যবহার করতে হয়।

সরজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে কম্পিউটার সেবার জন্য ল্যাব থাকলেও, কম্পিউটার নেই। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ইন্টারনেটের আওতার কথা বলা হলেও পরিপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন না ব্যবহারকারী।

জানতে চাইলে লাইব্রেরিয়ান (ভারপ্রাপ্ত) মো. নাসিরুল ইসলাম জানান, করোনার সময় লাইব্রেরি থেকে চুরি যাওয়া সব কম্পিউটার উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এদিকে সব কম্পিউটারের অবস্থা ভালো নয়। লাইব্রেরির ধারণ ক্ষমতা কম। তারপরও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উপাচার্যের নির্দেশে কম্পিউটারগুলো স্টোর রুমে স্থানান্তরিত করে ই-লাইব্রেরি বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের সিস্টেম এনালিস্ট বি এম আরিফুল ইসলাম জানান, ব্যান্ডউইথ বিল, ইন্টারনেট সংক্রান্ত বিভিন্ন ডিভাই কেনা, ওয়েবসাইট হোসিং, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকের দপ্তর, অর্থ দপ্তরের কাজে ব্যবহৃত সফটওয়্যার ও সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের ব্যয় ইন্টারনেট খাতের মধ্য থেকেই দেওয়া হয়।

আরিফুল ইসলাম আরো বলেন, ‘বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়ে ৪০০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ সংযোগ রয়েছে। তবে নতুন একাডেমিক ভবন ও শিক্ষার্থীদের হলসহ কাজ চলমান বিভিন্ন ভবনের ঠিকাদারদের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পুরাতন তিনটি হল, একাডেমিক, প্রশাসন ভবন, ক্যাফেটেরিয়া ও লাইব্রেরির বেশ কিছু ডিভাইসে সমস্যা ছিল। সেগুলো পরিবর্তনের জন্য পাঠানো হয়েছে। ডিভাইসগুলো এলে ইন্টারনেটের ধীর গতির সমস্যা অনেকটাই সমাধান হবে।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট কর্মকর্তা তানিয়া ইসলাম বলেন, ‘ইন্টারনেট সংক্রান্ত বিষয়াদি ইন্টারনেটখাতের মধ্যেই পড়ে। এক্ষেত্রে বিগত অর্থবছগুলোতে যে পরিমাণ বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছিল, আমরা সেই অনুযায়ী বাজেট পাশ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে হস্তান্তর করেছি। চলমান অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো প্রস্তাবনা পাই নাই।’

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বশেমুরবিপ্রবি,ইন্টারনেট ও কম্পিউটার,সেবা বঞ্চিত
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close