গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন, ক্রেতাদের স্বস্তি

সিরাজগঞ্জে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হলেও এর দাম পাচ্ছেন না সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা। এতে হতাশায় ভুগছেন তারা। বাজারে ফুল কপি, বাধাঁ কপি, গাজর, খিরা, কাচা মরিচ, মুলা, লাউসহ বিভিন্ন সবজির দাম কমেছে । এতে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও লোকসানের ধুয়া তুলেছেন চাষীরা।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা বনবাড়িয়া হাটে ফুলকপি ৩ কেজি ১৫ টাকা, বাধাকপি ৫ টাকা পিচ, গাজর ১৫ টাকা কেজি, খিরা ১০ টাকা কেজি, কাচামরিচ ২০-২৫ টাকা কেজি, লাউ প্রকার ভেদে ২০-৩০ টাকা পিচ, বেগুন ২০ টাকা কেজি, আদা ৭০-৮০ টাকা কেজি, শিম ১০ টাকা কেজি, আলু ২০ -২৫ টাকা কেজি সহ বিভিন্ন সবজির দাম কম।
কৃষকরা বলছেন, এই দামে মুলা, পাতা কপি ও ফুলকপি বিক্রি করে উৎপাদনের খরচই উঠছে না। অন্যদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জ সদর কাজিপুর সহ বিভিন্ন উপজেলায় এবার প্রচুর শীতের শাকসবজি চাষ হয়েছে।বাজারে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমেছে সব ধরনের সবজির। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মুলা এখন বিক্রি হচ্ছে ২ টাকা এবং ফুলকপি বড় প্রতি পিস ৩ থেকে৪ টাকা, শিম সহ বিভিন্ন সবজির দাম অনেকটাই কম।
কাজিপুরের সোনামুখী ইউনিয়নের পাঁচগাছি গ্রামের হাসান আলী বলেন, এবার আমি ৩ বিঘা জমিতে পাতাকপি, সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছি। সেখানে জমি তৈরিসহ বীজ, সার, কীটনাশকে হাজার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শুরুর দিকে আশানুরূপ দাম পেলেও বর্তমানে বাজারে কপির দাম না থাকায় চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রকোনা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ৪ বিঘা জমিতে মুলা ও ফুলকপি,বাধাকপি লাগিয়েছি। প্রথম দিকে কিছুটা ভালো দাম পেয়েছি, এখন বিভিন্ন সবজির দাম কমে যাওয়ায় আমাদের লাভ হবে না। কাজিপুরের নাটুয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী হামিদুল বলেন, সবজি কিনে সিরাজগঞ্জে আড়তে নিতে নৌকা ভাড়া ও গাড়ি ভাড়া বেড়েছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন সবজির দাম প্রতিমণ শ্রমিক খরচসহ পৌঁছাতে খরচ পড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, এমন অবস্থায় আমরাও খুব বেশি লাভ করতে পারছি না।
কাজিপুর উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান জানান, চলতি রবি মৌসুমে ৮শ' ৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি আবাদ করা হয়েছে।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন, এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এবার অন্য সবজির সঙ্গে চাষিরা একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে মুলা ও ফুলকপি চাষ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় হাট-বাজারে আমদানিও বেশি। সবজি পচনশীল পণ্য। সেইসঙ্গে সংরক্ষণ সুবিধা না থাকায় ক্ষেত থেকে উত্তোলন করেই কৃষকদের বিক্রি করতে হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ.জা.মু আহসান শহীদ সরকার বলেন, এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সিরাজগঞ্জ সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। সরবরাহ বেশি থাকায় বাজারে সবজির দামও কমেছে। ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
পিডিএস/এমএইউ