সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে সাংবাদিকের উপর হামলা, থানায় জিডি

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ব্যক্তিমালিকানা জায়গা দখল করে মহিষলুটি হাটে মাছের সেড নির্মাণের অভিযোগ ওঠে মহিষলুটি চৌরাস্তা মৎস্য ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেড ও এলজিইডির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে দৈনিক পত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশ হয়।
এদিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহিষলুটি হাটে মাছের সেড নির্মাণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ফলোআপ সংবাদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সময় (২ ফেব্রুয়ারি) রবিবার বেলা আড়াইটার দিকে তাড়াশ সংবাদদাতা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তনের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর গোলাম মোস্তফা হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে তিনি তাড়াশ থানায় জেনারেল ডায়রি (জিডি) করেছেন। জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. আলমগীর হোসেন। তিনি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নওগাঁ ইউনিয়নের গোয়াল গ্রামের ডা. আনছার আলী খোয়াজের ছেলে রুবেল আহম্মেদ বলেন, আমি মহিষলুটী হাটের পাশের নওগাঁ সড়ক দিয়ে নওগাঁ বাজারে যাওয়ার সময় দেখতে পাই আজম আলী, সোহেল প্রধান ও আইয়ূব আলী নামে তিন ব্যক্তি সাংবাদিককে মারার আক্রমন করছেন। তাদের বাক-বিতন্ডা দেখে আমি কাছে যাই। ছবি তোলার সময় সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন তারা।
হামলার শিকার দৈনিক ইত্তেফাকের তাড়াশ সংবাদদাতা গোলাম মোস্তফা বলেন, জানুয়ারি মাসের ২৩ তারিখে মহিষলুটি হাটে মাছের সেড নিমার্ণের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেডের নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য বিশেষভাবে বলা হয়। কিন্তু কিছুতেই সেড নির্মাণ বন্ধ করছেন না মহিষলুটি চৌরাস্তা মৎস্য ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেড ও এলজিইডি। বরং নির্মাণ শ্রমিক বাড়িয়ে রাতে লাইট জ্বেলে কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, গতকাল রবিবারও পুরোদমে মাছের সেড নির্মাণের কাজ চলছে মহিষলুটি হাটে। তখন আমি নির্মাণ কাজের ছবি তুলছিলাম ও ভিডিও ধারণ করছিলাম। এরই মধ্যে মহিলুটী হাটের সভাপতি ও নওগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজম আলী, উপজেলা যুব দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল প্রধান, মহিষলুটি হাটের সদস্য আইয়ূব আলী আমাকে মারার আক্রমন করেন ও আমার দুইটি স্মার্ট ফোন কেড়ে নেন। সর্বপরি আর কোনদিন মহিষলুটি হাটের সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
নওগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও মহিলুটী হাটের সভাপতি আজম আলী, উপজেলা যুব দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল প্রধান ও মহিষলুটি হাটের সদস্য আইয়ূব আলী বলেন, সাংবাদিকের সাথে কোন অশোভন আচরণ করা হয় নাই। ছবি তোলার সময় ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, পরে দিয়েছি।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরদার মো. আফছার আলী বলেন, আপনি সাংবাদিককে আমাদের সাথে বসতে বলুন। তিনি উভয় পক্ষের দলিল দেখুন। আমার দলীয় নেতাকর্মী সাংবাদিকের সাথে অশোভন আচরণ করে থাকলে তারও বিচার দেওয়া হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, আমি গত সোমবার সেড নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য লিখিতভাবে ঠিকাদারকে বলে দিয়েছি। ঠিকাদার শামিম হোসেন বলেন, কাজ বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে মামলার বাদী নুর হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরও মহিষলুটি হাট কমিটি ও এলজিইডি যোগসাযোস করে মহিষলুটি হাটে মাছের সেড নির্মাণ করছেন আমার জায়গার উপর। শেষ খবর পর্যন্ত (৩ ফেব্রুয়ারি) সোমবার দিনও যথারীতি নির্মাণ কাজ চলছিল। আমি বড় অসহায় হয়ে পড়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা বলেন, আদালতের রায় অবমাননা করলে পুলিশের সহায়তা নিতে বলেন।
তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, আদালত থেকে থানাকে নিদের্শ প্রদান করবেন। তখন পুলিশ ব্যবস্থা নেবেন।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, মহিষলুটি মাছের হাটে সেড নির্মাণ কাজ চলছে কি না দূর থেকে কিছুই বলতে পারছি না। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ করার কোন সুযোগ নেই।
পিডিএস/এমএইউ