গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ
কাজিপুরে ফরমালিনমুক্ত কুল বরইয়ের চাহিদা দেশব্যাপী

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ফরমালিনমুক্ত কুল বরইয়ের চাহিদা দেশব্যাপী। প্রতিদিন হাট-বাজারে মিলছে এই বরই। বরইটি দেখতে অতি সুন্দর এবং বলের মত গোল বলে এর নাম বল সুন্দরি নামকরণ করা হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। ভাল দাম পাওয়ায় চাষীরা লাভবান হচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত কুলের চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপী।
কাজিপুর অঞ্চলে আম, কাঁঠাল ও অন্যান্য ফলনের পাশাপাশি কুল চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। অন্যান্য ফসলের তুলনায় খরচ এবং রোগবালাই কম হওয়ায় কুল চাষ দিন দিন বাড়ছে। অনেক চাষি মৌসুমি চাষাবাদের পরিবর্তে স্থায়ীভাবে নিজের জমিতে কুল চাষ করছেন। কাজিপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বল সুন্দরী, আপেল কুল, ভারত সুন্দরী ও বাউ কুল আবাদ হচ্ছে। তবে খেতে টক হওয়ায় দেশি জাতের কুলের চাহিদা কম। এক্ষেত্রে মিষ্টি জাতের কুলের চাহিদা রয়েছে সর্বত্র।
ইতোমধ্যে কাজিপুর উপজেলার মেঘাই, সোনামুখী, চালিতাডাঙ্গা, গান্ধাইল, আলমপুর, ঢেকুরিয়া, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, জজিরা, চরগিরিশ, রঘুনাথপুর, কুমারিয়াবাড়ীসহ বিভিন্ন হাট বাজারে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকায় চাষকৃত এ বড়ই বা কুল বিক্রয় করতে আসতে চাষিরা। তবে হাট-বাজারে বল সুন্দরী, আপেল কুল জাতের কুলের দেখা মিলছে বেশি। প্রতি কেজি ১৩০/১৫০ টাকা বিক্রয় করছে বল সুন্দরী ও আপেল কুল। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১ টি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়নের ১০ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে বল সুন্দরি জাতের বড়ইয়ের চাষ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। হেক্টর প্রতি ১৬ টন উৎপাদন হয় বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। এতে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা কুল বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শাহীন আলম, কুল চাষি নতুন মাইজবাড়ী গ্রামের আবু সাঈদ তরফদার ও আলমপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, এসব কুল খেতে বেশ সুস্বাদু হওয়ার সারাদেশে এই কুলের কদর রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বেশিভাগ বাগানের কুল পরিপক্ব হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই কুল বিক্রয় হচ্ছে এবং প্রান্তিক চাষিরাও বেশ লাভবান হচ্ছেন।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, সাধারনত রবি মৌসুম অর্থাৎ শীতকালে এই কুল চাষের ফলন হয়ে থাকে। এ উপজেলায় এই কুল বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে থাকে এবং উপজেলা কৃষি অফিস থেকে স্থানীয় কুলচাষিদের বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রতিবছরের ন্যয় এবারও কাজিপুরের কুল চাষিরা লাভবান হয়েছে।
পিডিএস/এমএইউ