জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
জগন্নাথপুরে আব্দুস সোবহান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পৌর সদরের হবিবপুর আব্দুস সোবহান উচ্চ বিদ্যালয়ে এডহক কমিটির সভাপতি এডভোকেট জিয়াউর রহিম শাহিনের বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি ও এডহক কমিটিতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে সভাপতি পদে নিয়োগ, বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির প্রতিবাদের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন অনুষ্টিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারী) দুপুরে বিদ্যালয়ে জগন্নাথপুর-সিলেট মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধন করেন। এতে বক্তব্য দেন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোছা. তানিয়া জান্নাত, মোছা. সালিহা মেহজাবিন, মো. কাউছার আহমদ, মো. মুত্তাকিম, দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোশতাক হোসাইন মাহির, মো. রুহান আহমদ, মো. ছাব্বির রায়হান রাহি প্রমুখ।
এ সময় শিক্ষর্থীরা বলেন, আমাদের একটাই দাবি অতিতে যিনি স্কুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এবং ঐ মামলায় তিনি হেরেছেন এবং দুরর্নীতি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে স্কুলে রেজুলেশন করা হয়েছে এবং শিক্ষা অফিসার কর্তৃক স্কুলের সকল দায়িত্ব পালন থেকে অপসারণ করা হয়েছিল এই জন্য আমরা শিক্ষার্থীর জিয়াউর রহিম শাহীনকে আর স্কুলের কোন দায়িত্বে দেখতে চাইনা।
পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, আব্দুস সোবহান উচ্চ বিদ্যালয় হবিবপুরে বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতি ও বিদ্যালয়ের স্বার্থ পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ও এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের আশংকায় এডভোকেট জিয়াউর রহিমকে এডহক কমিটির সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা মিষ্টি বিতরণ করেন ।
ছালিক সোবহান নামে আরেকজন লেখেন, হবিবপুর গ্রামের এবল এলাকার সবাইকে নিয়ে ১৯৯৭ সালে আমি আমার বাবার নামে “আব্দুস সোবহান উচ্চ বিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ডক্টর এডভোকেট জিয়াউর রহিম শাহীন ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে দীর্ঘ সময়েও বিদ্যালয়ের কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেনি, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই বিদ্যালয় পরিচালিত হতো। ২০১৬ সালে আমি ও আমার গ্রামবাসীরা বিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করি, কিন্তু তখন বিদ্যালয়ের ফান্ডে এক টাকাও ছিল না বরং বিপুল পরিমাণ ঋণ ছিল। গত সাত বছরে আমরা বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা ব্যয় করে নানা উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করেছি। চারতলা ভবন নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর, পুকুর ভরাটসহ বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি। সর্বশেষ, আমরা বিদ্যালয়টিকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। আমি এসব কথা বলতে চাইনি, কিন্তু জিয়াউর রহিম শাহীনের মিথ্যা ও বানোয়াট কার্যকলাপ দেখে আজ আমাকে লিখতে বাধ্য হতে হলো। গ্রাম ও এলাকাবাসীর একটাই দাবি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে এডভোকেট জিয়াউর রহিম বলেন, স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্ররোচিত করে যা করা হচ্ছে এটা এলাকার জন্য মন্দ ও অসুন্দর কাজ। এলাকার সকল ছাত্র/ছাত্রীরা আমাদের মানুষ, আমি যতাযত পক্রিয়ায় কমিটির সভাপতি হয়েছি। হেড মাষ্টার ও ইউএনও সাহেব বলছেন, সব নিয়ম মেনেই হয়েছি। গতকালও একটি মিটিং হয়েছে এটা কোন স্কুলের মিটিং নয়। এটা তো হেড মাষ্টার বা দায়িত্বশীলরা বুজতেন। গত কালকে দেলোয়ার নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা বক্তব্য দিয়েছেন এটাও সঠিক নয়। এটা নিয়ে চ্যালেন্স করেছি, আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিলে পারলে শাস্তি গ্রহন করবো। এটা ফ্যাসিবাদের মানুষ। আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা।