লামা (বান্দরবান) সংবাদদাতা

  ২০ জানুয়ারি, ২০২৫

প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

লামায় ফেয়ারী এগ্রোতে অব্যাহত লুটপাট 

লামা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন ফেয়ারী এগ্রো কমপ্লেক্সের এস্টেট অফিসার গোলাম মোস্তফা।  ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ।

বান্দরবানের লামা উপজেলায় প্রকাশ্যে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফেয়ারী এগ্রোর বনজ-ফলদ বাগানের গাছ, গরু-ছাগল, খামারের মাছ ও হাঁসসহ ১০ কোটি টাকার অধিক মূল্যের সম্পদ লুটপাট হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা। একই সঙ্গে বনজ-ফলদ বাগান, গরু-ছাগলসহ আরো ১০ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট চলছে বলে জানান তিনি।

এ অবস্থায় উপজেলার সরই ইউনিয়নে সন্ত্রাসী কায়দা এলাকায় অবস্থিত এগ্রো বেইজ প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ করায় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এগ্রো কমপ্লেক্সের এস্টেট অফিসার গোলাম মোস্তফা।

গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের কুটুম বাড়ি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এতে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা এসব লুটপাট ও গাছ কাটার বিষয়টি প্রতি মূহুর্তে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), কেয়াজু পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, লামা বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করে যাচ্ছি। লিখিতভাবে থানায় এজাহার দায়ের করেছি। কোনো প্রতিকার না পেয়ে সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করে সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।’


  • অন্তঃবর্তী সরকারের প্রশাসনকে বিতর্কিত করার জন্য এই লুটপাট
  • বনজ-ফলদ বাগানের গাছ, গরু-ছাগল, খামারের মাছ ও হাঁসসহ ১০ কোটি টাকার অধিক মূল্যের সম্পদ লুট
  • আরো বনজ-ফলদ বাগান, গরু-ছাগলসহ আরো ১০ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট অব্যবহত
  • থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, বন বিভাগকে অবহিত করেও মিলছে না প্রতিকার

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এস্টেট অফিসার জানান, বহু টাকা খরচ করে ফেয়ারী এগ্রো বাগান তৈরি, মৎস্য চাষসহ এগ্রো বেইজ কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকায় কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই প্রতিষ্ঠানে শতাধিক কর্মচারী নিয়মিত কাজ করছেন। স্থানীয় লোকজনও এই এগ্রো বেইজ কার্যক্রমের মাধ্যমে উপকারভোগী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। গত বছরে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একটি সুযোগ সন্ধানী ‘সন্ত্রাসীগোষ্ঠী’ সেখানে লুটপাট ও তাণ্ডব চালিয়েছে। চিহ্নিত এসব লুটপাটকারীরা খামারের অনুমানিক ৩ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২০০টি উন্নত জাতের গরু, প্রায় ১ কোটি টাকার গোদার মাছ, প্রায় ৫০ লাখ টাকার কয়েকশত ছাগল, আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা মূল্যের হাঁস-মুরগি লুটপাট করে নিয়ে গেছে। একইভাবে লুটপাটকারীরা ফেয়ারী এগ্রো বেইজের ২০০ একর জায়গার সেগুনসহ অন্যান্য জাতের মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে গেছে, যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই পর্যন্ত ১০ কোটি টাকার অধিক মূল্যের সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে গেছে চিহ্নিত লুটপাটকারীরা। এখনো সেই লুটপাট অব্যহত আছে।

এস্টেট অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনকে আমরা সময়ে সময়ে এই সব বিষয়ে অভিযোগ আকারে জানিয়েছি। বর্তমানে স্থানীয় ও বহিরাগত সশস্ত্র লোকজন দিয়ে আগের কাটা গাছ গাড়িতে সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে। এখনও এই গাছ কেটে পাচার অব্যাহত রেখেছে।

সম্প্রতি শেখ আহাম্মদ গুনু নামক একজন লুটপাটকারী ফেয়ারি বাগানের গাছ কেটে গাড়িতে (ঢাকা ল-২১৮) পাচারকালে গাড়িটি জব্দ করেছে বন বিভাগ। তারপরও প্রতিদিন অসংখ্য গাছ কেটে করে গাড়িতে কাঠ পাচার অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে ফেয়ারি এগ্রোতে অবশিষ্ট গাছ, ছাগল-গরুসহ ফলদ ও বনজ বাগানের প্রায় ১০ কোটি টাকার মূল্যের সম্পদ লুটপাটের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’

লিখিত বক্তব্যে গোলাম মোস্তফা বলেন, লুটপাটকারীরা ফেয়ারী এগ্রো বেইজের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত কর্মচারী ও অন্যান্য লোকজনকে বাগান ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য নানা ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে আসছে। এতে বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

এস্টেট অফিসার বলেন, ‘লুটপাটকারীরা দেশের বর্তমান অন্তঃবর্তী সরকারের প্রশাসনকে বিতর্কিত করার জন্য এই লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে বলে আমরা মনে করি। লুটপাটকারীরা ফেয়ারী এগ্রো কমপ্লেক্সে সন্ত্রাসী কায়দায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে। তারা বলে বেড়াচ্ছে, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে। এই বাস্তবতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি তাদের লুটপাট বন্ধে এগিয়ে না আসে, তবে এই লুটপাটের ধারা বন্ধ করা সম্ভব হবে না।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বান্দরবান,ফেয়ারী এগ্রো
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close