ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
ভৈরবে আওয়ামীলীগ অফিস কার্যালয় থেকে মরদেহ উদ্ধার

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিস কার্যালয় থেকে এক খাবার হোটেল কারিগর শফিক মিয়া (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে ভৈরব থানা পুলিশের সদস্যরা।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভৈরব বাজারের স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিস কার্যালয়ের সেচ্চাসেবকলীগ এর কক্ষ থেকে এই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত যুবক শফিক কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়ছতী ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের মো. শামসু মিয়ার প্রথম ছেলে। সে সাড়ে চার বছর আগে পিরিজপুর এলাকায় সাদিয়া নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন এবং দুই বছরের রুহান নামে এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে এগারোটায় এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছি। মরদেহটি ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সেচ্চাসেবকলীগ এর অফিস কক্ষে পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে তার পরনে জিন্স প্যান্ট ও খালি শরীরে ছিলো। মরদেহের পাশে একটি মোবাইল ফোন, খালি মদের বোতল ও তার প্যান্টের পকেটে বিড়ির প্যাকেট ছিলো। পরে নিহতের ভিডিও সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরলে তার ভাই এসে তার পরিচয় সনাক্ত করেন।
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে সাপ্তাহিক কাপড়ের হাটের বাজার হওয়ার বাজারে অনেক গাড়ি আসা যাওয়া করে। সেই হিসেবে রাতের কোনো এক সময় ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে সকালে এক লোক পরিত্যক্ত আওয়ামী লীগ অফিস কার্যালয়ে মোটর সাইকেল রাখতে গিয়ে এই মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
নিহত যুবক শফিকের ছোট ভাই জনি মিয়া জানায়, আমার বড় ভাই আগে নরসিংদী এলাকায় বিভিন্ন খাবার হোটেলে কাজ করতো। গত একমাস ধরে সে ভৈরবের বিভিন্ন হোটেলে কাজ করছে। শেষ দুই তিন দিন সে ভৈরব বাজারের আদুরী হোটেল এন্ড মিষ্টান্ন ভান্ডারে কাজ করতো। সে জন্মের পর থেকেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভোগছিলেন। সে নিয়মিত ইনহেলার ব্যববহার করতো। আজ দুপুরে সোসাল মিডিয়ায় আমার ভাইয়ের ভিডিও দেখে ভৈরবে এসে জানতে পারলাম সে আমার ভাই আর আওয়ামী লীগ অফিসে তার মরদেহ পাওয়া গেছে।
আদুরী হোটেলের পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দেব জানান, পুলিশ খবর দিলে ঘটনাস্থলে এসে দেখি শফিক নামে ছেলেটির মরদেহ আওয়ামী লীগ অফিসে পড়ে আছে। সে আমাদেরই হোটেলে গত দুই তিন দিন বদলি কাজ করছে। সে আমার কাছ থেকে ৩শ’ টাকা নিয়েছিলো কি কিনতে। আজ সকালেও তাকে আমাদের হোটেলের পাশ দিয়ে হেটেঁ যেতে দেখেছি।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, মরদেহে কোনো আঘাতের কোন চিহ্ন নাই, তারপরেও তদন্ত করা হবে। এছাড়া বিস্তারিত তদন্তের জন্য এডিশনাল এসপি, ক্রাইমসিন ও সিআইডি টিম আসছে কাজ করার জন্য।
এডিশনাল এসপি সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, আমরা নিহত শফিকের ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে তার পরিচয় জানতে পেরেছি। আমাদের ক্রাইমসিনের সদস্যরা কাজ করছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বর্তমানে মরদেহটি সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে তা খুঁজে বের করতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পুলিশ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।