আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

আমতলীতে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা প্ররোচনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

বরগুনার আমতলীতে ব্যবসায়ী নিয়াজ মোর্শ্বেদ তনয়ের আত্মহত্যা প্ররোচনার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবীতে আমতলীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১০ টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করা হয়। এ মানববন্ধনে সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেয়।

আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, নিয়াজ মোর্শ্বেদ তয়নকে আত্মহত্যার প্ররোচনার একজন আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত আছে।

জানাগেছে, ছয় বছর আগে আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আলহাজ্ব নান্নু মোল্লার ছেলে নিয়াজ মোর্শ্বেদ তনয়ের সঙ্গে আরেক ব্যবসায়ী চাওড়া চলাভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ফারুক গাজীর মেয়ে ফারিয়া জান্নাতি মীমের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পর স্বামী তনয় জানতে পারে তার স্ত্রী মীমের আরো একটি বিয়ে হয়েছিল। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। ওই দম্পতির ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ইতিমধ্যে তার স্ত্রী ফারিয়া জান্নাতি মীম তারেক হাসান বাহাদুর নামের এক ছেলের সঙ্গে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েছে। পরকিয়া প্রেমিক নিয়ে তিনি (মীম) বিভিন্ন স্থানে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন এবং টিকটক ভিডিও তৈরি করে সোসাল মিডিয়ায় প্রচার করছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তনয় স্ত্রী মীমকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর তালাক দেয়। তালাক নোটিশ পেয়ে ১৭ অক্টোবর মীম তার স্বামী নিয়াজ মোর্শ্বেদ তনয়ের বিরুদ্ধে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে যৌতুক মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই পুলিশ তনয়কে গ্রেপ্তার করে। এ মামলায় তনয় ১১ দিন জেল হাজতে ছিল। স্ত্রী ফারিয়া জান্নাতি মীম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা স্বামী তনয়কে বিভিন্নভাবে বুলিং ও হয়রানি করতো। এতে নিয়াম মোর্শ্বেদ তনয় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ফলে সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। স্ত্রীর পরকিয়া ও তার পরিবারের লোকজনের বুলিং ও হয়রানির এমন কর্মকাণ্ড সইতে না পেরে গত ২৯ নভেম্বর ভোররাতে তনয় স্ত্রী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও তার স্বজনদের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। মুহূর্তেই সেই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এরই মধ্যে তিনি বিষপান করলে গত ৩০ নভেম্বর ঢাকা শহীদ সোহরাওয়াদী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

এ ঘটনায় গত ৫ ডিসেম্বর আমতলী থানায় তনয়ের বড় বোন অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে তনয়ের স্ত্রী ফারিয়া জান্নাতি মীমকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই পুলিশ মীমের বড় ভাই আসামি খালিদ গাজীকে গ্রেপ্তার করে।

ঘটনার ধারাবাহিকতায় তনয়ের আত্মহত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটে আদালতের আইনজীবি মোঃ আরিফ উল হাসান আরিফের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তনয়ের বাবা মোঃ নান্নু মোল্লা ও বড় বোন মামলার বাদী আইনজীবী তানিয়া আক্তার। মানবন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।

মামলার বাদী আইনজীবী তানিয়া আক্তারের অভিযোগ আসামিরা মামলা তুলে নিতে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি মামলা তুলে না নিলে আমাকে ও আমার মেয়েকে অপহরণের হুমকি দিচ্ছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আসামি,গ্রেপ্তার,আমতলী,বরগুনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close