গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

সিরাজগঞ্জের যমুনা চরে মহিষ ও গরুর ভ্রাম্যমাণ বাথান

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদী বুক জুড়ে জেগে উঠা চরে ঘাস খাওয়ানের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শত শত মহিষ ও গরু নিয়ে জমায়েত হয়েছে বাথানীরা । আর এই গরু ও মহিষের খামার দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ জমায়েত হচ্ছে যমুনার চর জাগা সবুজের বুকে। প্রতি বছরই এই ভ্রাম্যমাণ বাথান গুলো দেশের বিভিন্ন জেলা হতে একত্রিত হয়ে মহিষ ও গরু ঘাস খাওয়ানের জন্য নিয়ে আসে যমুনার চরে । চরে গজিয়ে উঠা সবুজ ঘাস দিয়ে মহিষ ও গরুর খাদ্যের যোগান দিচ্ছেন।

চরাঞ্চলের বিশাল এলাকার উপর অবস্থানকারী এই বাথানগুলোর এক প্রান্তে নদী রয়েছে যা খামারিদের জন্য মহিষ ও গরুগুলোর পানি পান করা ছাড়াও গোসল করানো সুবিধা পাচ্ছে। তাদের বাথানে বিভিন্ন প্রজাতির মহিষ ছাড়াও রয়েছে গরুর বিভিন্ন জাত। এদের মধ্যে মানিকগঞ্জ, বগুড়া, জামালপুর জেলা থেকে একত্রিত হয়ে এনায়েতপুর থানা আওতাধীন ঘাটাবাড়ী, উতুলি, বাঐখোলা, মালিপাড়া, নওহাটা, তেগুরী, গোসাইবাড়ি, কুচেমোড়া, কাজিপুরের তেকানীসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে। সরেজমিনে দেখা যায়, তাদের এই সব বাথানে প্রায় ৪শ ছোট বড় মহিষ ছাড়াও কয়েক’শ গরু রয়েছে।

বাথান পরিচালনাকারী হানিফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাজিপুরের বিভিন্ন চরে প্রায় ১০টি বাথান রয়েছে। প্রতিটি বাথানে ২০ থেকে ২৫টি গরু ও দেড় থেকে ২শ মহিষ আছে। বাথানগুলো শ্রাবণ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত পরিচালনা হয়ে থাকে। এ সময়ের মধ্যে গরু- মহিষের খাদ্যের জন্য ঘাস এক থেকে দেড় লাখ টাকায় স্থানীয় জমির মালিকদের থেকে চর ইজারা নেওয়া হয়। আয় হিসেবে প্রতিটি বাথান থেকে প্রতিদিন ১৭০ থেকে ১৮০ লিটার দুধ সংগ্রহ করা হয়। যা ৮০ টাকা লিটার দরে বিক্রয় করা হয়।

গরু ও মহিষ এর রাখাল হাবিব বলেন, আমার ৫০ টি মহিষ রয়েছে। আমার মতন অনেকে একসাথে এসে এখানে মহিষ ও গরু গুলো খাওয়াচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের এলাকায় ঘাস কম থাকায় এখানে এসেছি, প্রায় ছয় মাস যাবৎ অবস্থান করছি আগামী বর্ষা মৌসুমে যার যার এলাকায় চলে যাব।

আরেক রাখাল আব্দুল আজিজ বলেন, এখানে নদী নিকটে হওয়ায় এবং সবুজ ঘাস বেশি হওয়ার কারনে খামার পরিচালনা করতে খুব সহজু হয়। তিনি আরো বলেন, এখানকার লোকজন অনেক ভাল। আমাদের খুবই সাহায্য সহযোগিতা করছে, আশা করি প্রতি বছর এই সময়ে আমরা এখানে গরু ও মহিষ নিয়ে আসি এবং ভবিষ্যতেও আসব।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ওমর ফারুক জানান, প্রতি বছরই সিরাজগঞ্জে যমুনার চরে গজিয়ে উঠা সবুজ ঘাস খাওয়ানোর জন্য পাশ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে বাথানীরা গবাদি পশু নিয়ে আসে । বর্ষা মৌসুমে চর গুলিতে পানি উঠার পুর্বেই তারা আবার নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যায় । তাছাড়াও প্রতিটি বাথান থেকে বাথানিরা দুধ সংগ্রহ করে । প্রতি কেজি দুধের মূল্য বর্তমানে ৮০ টাকা। এথেকেও বাথানিরা অনেকটাই লাভবান হয়।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিরাজগঞ্জ,মহিষ,বাথান,যমুনার চর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close