কুয়াশা নয় যেন বৃষ্টি ঝরছে পঞ্চগড়ে, চরম দুর্ভোগ
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরা শিশিরের সঙ্গে হিমেল হাওয়া যোগ হওয়ায় উত্তরের এই জনপদের মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। সামনে তাপমাত্রার পারদ আরও নামতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তেঁতুলিয়া অফিস জানায়, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর ছয়টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। বইছে হিমেল হাওয়া। শহরের সড়কগুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমিয়ে চলছে দূরপাল্লার বাস ও মিনিবাস, সিএনজি, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন। একই শহরের বাইরের সড়কগুলোতেও। এখন পর্যন্ত রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা কম।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরেই শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন তারা। আজ ঘন কুয়াশার পাশাপাশি হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ায় বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। শীতে হাত-পা অবশ হয়ে আসার উপক্রম।
পাথর শ্রমিক সোহরাব হোসেন বলেন, প্রতিদিন ভোরে কাজে গেলেও আজ কুয়াশার কারণে কাজে যেতে পারছি না। বেলা বাড়ার পর বের হওয়ার চিন্তা করেছি।
ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে ঠান্ডা বেশি হলেও অনেক সময় দূরের যাত্রী বাস থেকে নামেন। এ সময় ভাড়া বেশি পাওয়া যায় বলে সকালে কষ্ট হলেও এসেছি। ঠান্ডার মধ্যে ভ্যান চালানো অনেক কষ্টকর। কিন্তু কী করব। উপায় তো নেই। ভ্যান চালিয়ে আমাদের চলতে হয়।
স্কুল শিক্ষার্থী রায়হান হোসেন বলেন, গতদিনের তুলনায় আজকে কুয়াশা পড়েছে অনেক। ঠান্ডাও লাগছে বেশ। তারপরও ঠান্ডা উপেক্ষা করে কোচিংয়ে বের হয়েছি।
এদিতে ঠান্ডা পড়ায় বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীদের ভিড়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় জানান, উত্তরের হিমশীতল ঠান্ডা বাতাস বইছে এবং গতকাল থেকে কুয়াশার আবরণে ঢাকা পড়েছে উত্তরের এ জেলা। আজ কুয়াশাটা আরও বেশি পড়েছে। তবে তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যেই ওঠানামা করছে। যা গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
পিডিএস/এমএইউ