বান্দরবান প্রতিনিধি

  ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার

শাহিন বাহিনীর নির্যাতন রেহাই চান ভুক্তভোগীরা 

বান্দরবান প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার।  ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও পার্শ্ববর্তী রামু উপজেলার মূর্তিমান আতঙ্ক আন্তঃজেলা ডাকাত দলের শীর্ষ সর্দার শাহিন উর রহমান ওরফে শাহিন, তার নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য রোকসানা নাসরিন খোরশেদ, মুফিজুর রহমান ও মকসুদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি ডাকাত শাহিন ১৫-১৬ জনের অধিক সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নারিচবুনিয়া গ্রামে তাদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। এসময় শাহিন বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যেকের হাতে হাতে ছিল ভারী ভারী অস্ত্র। সন্ত্রাসীরা গর্ভবতী এক গৃহবধূসহ এক কলেজ ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করে। এসময় কয়েকটি বসতবাড়িতে আগুন দেয় এবং ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে। পরে চলে যাওয়ার সময় শাহিন বাহিনী স্বর্ণালংকা, নগদটাকা লুট করে নিয়ে যায়। বর্তমানে ওই এলাকার মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীরা বলেন, ঘটনার পর নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় শাহীন ডাকাতসহ তার বাহিনীর সদস্য ফোরকান, জাহাঙ্গীর আলম, জসিম উদ্দিন, আগর, সিরাজুল ইসলাম, আব্দু সালাম, ইয়াছিন আরাফাত, সাহাব উদ্দিন, রবি আলম, সরোয়ার, আনোয়ার, রিদুয়ান, নোমান, নবী আলমসহ অজ্ঞাত ৩০/৬০জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করা হলেও এখনো কোন আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাদের পরিবার।

বর্তমানে সাইফুল ইসলামের পুরো পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলন অসহায় পরিবারটি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও শাহিন বাহিনীকে আইনের আওতায় আনার জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে, ডাকাত শাহীন রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝিরকাটা এলাকার মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে। শাহীনের বিরুদ্ধে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ৭টি ডাকাতি, ৩ টি অস্ত্র, ১টি মাদক, ৪ টি হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মায়ানমার সীমান্ত চোরাচালানের মূল হোতা হিসেবেও পরিচিত। যার কারনে নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু উপজেলার দুর্গম এলাকাগুলো তার বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তার ইচ্ছার ওপর চলে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির প্রায় ৬ ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ মানুষ।

স্থানীয়দের দাবি, শাহীন ডাকাত নিজেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবেও জাহির করে থাকেন। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলে অনেককে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে দেন বলেও দাবি তাদের। বিভিন্ন ডাকাতপ্রবণ এলাকা থেকে দুদর্ষ সদস্যদের এনে বর্তমানে মিয়ানমার সীমান্তে গরু, ইয়াবাসহ চোরাচালান সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছে তার বাহিনী।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে রামু গর্জনিয়া শিবাতলী পাহাড়ি এলাকার গোপন আস্তানা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আন্তঃউপজেলার শীর্ষ ডাকাত শাহিন উর রহমান প্রকাশ ডাকাত শাহিন। সে সময় প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও জড়িয়ে পড়েন অপরাধে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বান্দরবান,ডাকাত,সাংবাদিক সম্মেলন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close