সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে আমন চাষ
লক্ষ্যমাত্রার বেশি আমন আবাদ কাক্সিক্ষত দামে খুশি কৃষকরা
সিরাজগঞ্জের সাপ্তাহিক হাটগুলোতে শুরু হয়েছে আমন ধান বেচাকেনা। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে তিন শতাধিক হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। সেই সঙ্গে হাটে ধানের কাক্সিক্ষত দাম পেয়ে খুশি কৃষকরাও।
জেলার কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সিরাজগঞ্জে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে, তবে অর্জিত হয়েছে ৭৫ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৩৬০ হেক্টর বেশি। এদিকে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৭৮০ মেট্রিকটন। জেলার সবচেয়ে নাম করা সলঙ্গা হাটে নতুন রোপা আমন ধান জাত ভেদে বিভিন্ন দর দামে কেনাবেচা হচ্ছে।
- সলঙ্গায় সপ্তাহের দুই হাটবারে দুই হাজার মণ আমন বেচাকেনা
- জাত ভেদে দাম দেড় হাজার টাকা মণ পর্যন্ত
- ৭৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ
সলঙ্গায় সপ্তাহের হাটবার বৃহস্পতি ও সোমবার ছাড়াও অন্য দিনগুলোয় ধান কেনাবেচা হয়ে থাকে। তবে হাটবারে ধানের আমদানী বেশী পরিমাণ হয়। সলঙ্গা হাটবারে শত শত মণ ধান আমদানী ও কেনাবেচা হয়। এখান থেকে ধান পাবনার দাশুড়িয়া, ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান।
হাট আড়তদাররা জানান, বৃহস্পতিবার সলঙ্গা হাটে প্রায় ২ হাজার মণ ধান আমদানী ও কেনাবেচা হয়ে থাকে। সলঙ্গা হাটের আড়ত মালিকেরা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি দামে কেনাবেচা হয়েছে কাটারী নামের জাতের ধান। প্রতি মণ কাটারী জাতের ধান এক হাজার ৫০০, ৪৯ জাতের ধান এক হাজার ৪৫০, স্বর্ণা-৫ জাতের ধান এক হাজার ৩৫০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা, গুটি স্বর্ণা এক হাজার ২৫০ টাকা মণ দরে কেনাবেচা হচ্ছে।
হাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক হরমুজ আলী জানান, তিনি ৫ মন কাটারী জাতের ধান বিক্রী করতে এসেছেন প্রতি মন ধান এক হাজার ৫০০ টাকা করে বিক্রি করেছেন। আরেক কৃষক মজনু চকদার জানান, ১০ মণ স্বর্ণা জাতের ধান এক হাজার ৩৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।আড়ত মালিক গোলাম মোস্তফা বলেন, ভরা মৌসুমে হাটবারের দুদিনে হাজার হাজার মণ ধান আমদানী ও কেনাবেচা হয়। বাকি দিনগুলোতেও বিপুল পরিমাণ ধান কেনাবেচা হয়ে থাকে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুর্বণা ইয়াসমিন সুমি জানান, এই উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১১ হাজার ৫১৯ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে ও আশানুরূপ ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যেই কৃষকের ঘরে ধান উঠেছে এবং বেচাকেনাও শুরু হয়েছে। এখন ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ জা মু আহসান শহীদ সরকার বলেন, ‘চলতি বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫০ হেক্টর বেশি জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ধান রোপনের শুরুতে কৃষকদের ধানের চারা ও সার প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়। এখন উৎপাদিত আমন ধান দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি কৃষকরাও ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছে।’