ভোলা প্রতিনিধি
মমিনের হাতে সংসারের চাকা
অভাবের সংসারে ১১ বছরের শিশু মমিন এখন দায়িত্বশীল পুরুষ। মমিন আয় না করলে চুলায় আগুন জ্বলবে না। মমিন যেন অনেক দায়িত্বশীল। যে বয়সে সন্তানকে বাবা-মা আদর যত্ন করে স্কুলে পাঠানোর কথা এবং বাবা-মায়ের আদর স্নেহে বেড়ে উঠার কথা; ঠিক সেই বয়সেই শিশু মমিনের হাতে সংসারের চাকা। বলছিলাম ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার শিশু মমিনের কথা। মমিন ওই ইউনিয়নের মোশারফ ও রহিমা দম্পতির ছেলে। ৩ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে মমিন দ্বিতীয়।
আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ধনিয়া তুলাতুলি জেলে পল্লীতে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন শিশু জাল বুনছে। এর মধ্যে নজর গেল ১০-১১ বছরের এক শিশুর দিকে। রৌদ্রে কালো হয়ে গেছে তার শরীর। তাদেরই একজন মমিন, সে সুতার কাজ করছে। কথা হয় মমিনের সাথে। মমিন জানায়, বাবা খুচরা মাছ বিক্রেতা। অভাবের সংসার, তাই বুঝ হওয়ার পরই মমিনের কাঁধে ভর করে সংসার। বাবার একার আয়ে সংসার চলে না, তাই খালাতো ভাই আরিফ মাঝির নৌকায় আধ-ভাগী হিসেবে তার যাত্রা।
এ কাজ পারে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে মমিন বললো, ছোট থেকেই এ কাজ করি। কোন সমস্যা হয় না। স্কুলে যাওয়া হয় কি না, জানতে চাইলে মমিম উত্তরে বলে-ভাতই খাইতে পারি না, স্কুলে যামু কেমনে। তবে পড়ালেখা করতাম চাই, পারি না। কেমন আয় হয় ? প্রশ্ন করা হলে মমিন বলে-বড়রা যা পায়, আমি তার থেকে একটু কম পাই। ৩০০/৪০০ টাকা পাই, আবার কম ও পাই।
বন্ধুরা যখন স্কুলে যায় তখন কেমন লাগে ? প্রশ্ন করা হলে- নিঃস্বাস ফেলে মমিন বলে, খারাপ লাগে। আর লাগলেই কি করমু, আমরা গরীব মানুষ। মমিন কাজ করে তার খালাতো ভাই আরিফ মাঝির সাথে। আরিফ বলেন, আমরা গরীব মানুষ, তালে-মিলে চলি। মমিন ছোট হলেও ওর জ্ঞান অনেক ভাল।