সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
যমুনায় চর ও ডুবোচর জাহাজ চলাচল ব্যহত
বর্ষা শেষে শরৎ শেষ, হেমন্তের মাঝামাঝির এই সময়ে যমুনা নদীর বিভিন্ন অংশে অসংখ্য চর ও ডুবোচর জেগে উঠছে। আর এতে ব্যহত হচ্ছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দরগামী রাসায়নিক সার, জ্বালানী তেল ও পণ্যবাহী কার্গো-জাহাজ চলাচল। ফলে সঠিক সময়ে উত্তরাঞ্জলের ১৬ জেলার ১৪টি বাফার গুদামে আপদকালীন রাসায়নিক সার মজুদ ও জ্বালানী তেল সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টির আশংকা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যমুনা নদীর পাবনার বেড়া উপজেলার নাকালিয়া থেকে কৈটোলা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশাল বিশাল চর জেগে উঠেছে। এছাড়া কৈটোলা এলাকায় প্রায় ৫শ’ মিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে ডুবো চর। ফলে চট্টোগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ওটিসি-পাওয়ার-জিরো নামের একটি কার্গো জাহাজ সাড়ে ৮ লাখ লিটার ডিজেল তেল নিয়ে ওই স্থানে গত ৩দিন ধরে আটকা পড়ে আছে। এই জাহাজ আটকা পড়ার খবরে আরও ৬/৭টি জ্বালানী তেলবাহী জাহাজ নগরবাড়ি এলাকায় নঙ্গর করে রাখা হয়েছে। কৈটোলা এলাকার ওই স্থানে ড্রেজিং সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এগুলোকে এইভাবেই আটকে থাকতে হবে। কতদিনে নাগাদ ওখানে ড্রেজিং শেষ হবে তা সঠিকভাবে জানাতে পারেনি ড্রেজিং কতৃপক্ষ।
এ বিষয়ে আটকা পড়া ওটিসি-পাওয়ার-জিরো কার্গো জাহাজের মাস্টার মো: মীর হোসেন বলেন, গত ৩দিন ধরে কৈটোলা এলাকায় সাড়ে ৮ লাখ লিটার ডিজেল তেল নিয়ে আটকা পড়ে আছি। আমাদের জাহাজ উদ্ধারে গত ২ দিন ধরে ড্রেজার এসেছে। কিন্তু এখনও তারা সেটিং কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে নির্জন এই স্থানে অবস্থান করতে হচ্ছে আমাদের । তাছাড়াও অন্য জাহাজগুলি এখানে না এসে তারা নগরবাড়ি এলাকায় নঙ্গর করে রয়েছে। তিনি দ্রুত ড্রেজিং কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশন বাঘাবাড়ি নৌবন্দর শাখার সহ সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, পানি কম ও ডুবো চর জেগে ওঠায় নগরবাড়িতে ৭টি ও কৈটোলায় একটি জাহাজ আটকা পড়ে আছে। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে কৈটোলা এলাকায় ড্রেজিং সম্পন্ন করে এ জাহাজ গুলি বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে পৌছানোর ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর লেবার এজেন্ট আবুল হোসেন বলেন, এ নৌরুট দ্রুত সচল করা না হলে আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার ১৪টি বাফার গুদামে আপদকালীন সার মজুদ ও জ্বালানি তেল সরবরাহ বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়াও নৌবন্দরে কর্মরত প্রায় ২ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।
বিপিসির বাঘাবাড়ি ওয়েল ডিপোর ইনচার্জ ও যমুনা ওয়েল কোং এর ব্যবস্থাপক আবুল ফজল মো: সাদেকিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোজ খবর নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো। তিনি আরও বলেন, বাঘাবাড়িতে ডিজেলের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। ফলে এ ঘটনায় এই মূহুর্তে ডিজেলের উপরে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
এব্যাপারে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএ এর উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পিডিএস/ এল