কক্সবাজার প্রতিনিধি
কর্তৃপক্ষ উদাসীন
কলাতলী বীচ মোড় ময়লার ভাগার
সাগর পাহাড় ও নদীর অপূর্ব প্রাকৃতি সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত রয়েছে কক্সবাজারে। প্রতিবছর লাখো দেশি বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখরিত থাকে এই সমুদ্র জনপদ। অবকাশ যাপনের জন্য ভ্রমন পিপাসুদের পয়লা পছন্দ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এখনকার অবকাঠামো নির্মাণ ও পর্যটকদের নানা সুযোগ সুবিধার জন্য সরকারী ও বেসরকারী কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এখানে। তৈরি হচ্ছে বিপুল সম্ভাবনা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীনতা এবং কিছু গোষ্ঠী ও ব্যবসায়ীদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও খামখেয়ালীপনায় সেই সম্ভাবনা বিনষ্ট হতে চলেছে।
দখল-দূষন যেন এই সৈকতের ভাগ্যের একমাত্র লিখনি। এখানকার ব্যবসায়ীরা যেন দখল-দূষনের মিশন নিয়ে এসেছে এই সৈকতে। তারই প্রমাণ মেলে কক্সবাজারের কলাতলীর বীচ মোড়ে। এই বিচ মোড়টি এখন ময়লা ফেলার ভাগারে পরিণত হয়েছে। আশপাশের ব্যবসায়ীরা ময়লা ফেলে বীচ পয়েন্টটি ডাস্টবিনে পরিনত করেছে।
কক্সবাজারের পর্যটন খাত থেকে দেশের অর্থনীতিতে প্রতি বছর যোগ হচ্ছে বিশাল অংকের রাজস্ব। এখানে রয়েছে আলাদা পুলিশি সার্ভিস ও ম্যানেজম্যান্ট। পর্যটন শহরটিকে নতুন আঙ্গিকে সাজাতে নেওয়া হয়েছে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিকল্পনা। সেখানে নেওয়া হয়েছে সরকারী-বেসরকারি নানা পদক্ষেপ। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসছেন। কিন্তু এসব অনাকাক্সিক্ষত পদক্ষেপ সেই সম্ভাবনাকে ঝুঁকিতে ফেলছে। শুধু গুটিকয়েক অসাধু ব্যক্তির খামখেয়ালীপনা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকীর অভাবে পর্যটকরা বিমুখ হচ্ছেন। সৈকত হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। দখল-দূষন যেন এই সৈকতের নিয়তি হয়ে পড়েছে। কলাতলীর বীচ মোড়ে ময়লা আবর্জনা ফেলছেন আশপাশের ব্যবসায়ীরা। দেখেও না দেখার ভান করছে কর্তৃপক্ষ। ফলে পচাঁ দুর্গন্ধে এই পয়েন্ট দিয়ে পর্যটক আনাগোনা প্রায় বন্ধের উপক্রম। গত বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে এই বীচ পয়েন্টে একটি গর্তের সৃষ্টি হলে সেখানে ময়লা ফেলতে শুরু করে ব্যবসায়ীরা।
বিষয়টি নিয়ে পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ‘বিষয়টি বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা কউক এবং পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে কলাতলী বীচ মোড়টিকে সংষ্কার করা হবে। আশপাশের ব্যবসায়ীদের ময়লা রাখার জন্য নির্দিষ্ট ডাস্টবিন এর ব্যবস্থা করা হবে।’
বিষয়টি নিয়ে পর্যটন সংশি¬ষ্ট ব্যবসায়ী স্যান্ডি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রহমান জানান, ‘কলাতলী পয়েন্ট নিরাপদ ও নিরিবিলি বলে জায়গাটি ছিল পর্যটকদের খুব পছন্দের। এখানকার ব্যবসায়ীরা ও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করে আসছিলো। গত বর্ষায় বৃষ্টির ঢলে বীচে নামার একমাত্র রাস্তাটি গর্তে পরিনত হয়। ‘সঠিক সময়ে সেটি কর্তৃপক্ষ ভরাট না করায় আশপাশের কিছু অসেচতন ব্যবসায়ীরা সেখানে অঘোষিত ডাস্টবিনে পরিনত করে। যার কারনে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এই ডাস্টবিন। ফলে পর্যটকরা এই পয়েন্ট দিয়ে না নেমে ভিন্ন পয়েন্টে চলে যাচ্ছেন। এতে করে আমাদের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি কর্তৃপক্ষের নিকটা বিভিন্ন সময়ে এর প্রতিকার চেয়েও সঠিক সমাধান পাইনি। আমি চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই গর্তটি সংস্কার করে কলাতলী পয়েন্টটিকে পর্যটক বান্ধব পয়েন্ট হিসেবে গড়ে তোলা হোক।’ স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী এই গর্তটি ভরাট করে অঘোষিত ডাস্টবিনটি সরিয়ে নিয়ে পর্যটক নামার সু-ব্যবস্থা করা হলে কলাতলী পয়েন্টটি আগের সৌন্দর্য ফিরে পাবে।