উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৫১০ হেক্টরে
ধান নিয়ে স্বপ্ন কৃষকদের
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কৃষকেরা মাঠের রোপা আমন ধান ফসল নিয়ে নানা স্বপ্ন বুনছে। এ ধান ফসল নিয়ে একেক মাঠে একেক চিত্র দেখা মিলছে।
কৃষকেরা পরিকল্পনা করছেন ধান ফসল ঘরে উঠলে ধান বেচে সংসারের কোন কোন কাজে টাকা খরচ করবেন। বিভিন্ন মাঠে কৃষকেরা জমিতে নানা কাজে সময় পার করছেন। ধান জমিতে পানি সেচে মেশিন চালানোয় ব্যস্ত থাকছেন। আর নাবি করে লাগানো ধান জমিতে ঘাস নিড়ানি দেওয়া হচ্ছে । পোকার ক্ষতি থেকে রক্ষায় কীটনাশক ঔষধ স্প্রে করা হচ্ছে । কৃষকদের অনেকেই রোপা আমন ধান ফসল নিয়ে নানা আশা করছেন।
- এবারের মৌসুমে ১১ হাজার ৫০৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিলো।
- আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাচ হেক্টর পরিমাণ মোট ১১ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে।
- কৃষি প্রণোদনায় ১ হাজার ৪০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে তার বিভাগ থেকে বিনামূল্যে রোপা আমন ধান বীজ ও রাসায়নিক সার দেওয়া হয়েছিলো।
উল্লাপাড়া কৃষি অফিস থেকে জানানো হয় , উপজেলায় এবারের মৌসুমে ১১ হাজার ৫০৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিলো। সেখানে আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাচ হেক্টর পরিমাণ মোট ১১ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, সলঙ্গা , হাটিকুমরুল , পূর্ণিমাগাতী, সলপ, পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে কৃষকেরা রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন। কৃষকেরা জমিতে বেশী হারে ফলন মেলে এমন নানা জাতের রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন বলে জানা গেছে। কৃষি অফিস থেকে আরো জানা গেছে আবাদ করা রোপা আমন ধানের কয়েক জাত হলো ব্রি ধান ৭৫ , ব্রি ধান ৮৭ , ব্রি ধান ৩৯ , ব্রি ধান ৪৯ , ব্রি ধান ৩২ , বি আর ২২ , এজেড ৭০০৩ জাত।
গত দুদিনে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর , সলঙ্গা , সদর উল্লাপাড়া ইউনিয়নের চরবেড়া, গোজা, বনবাড়িয়া, অলিদহ, হরিণচড়া, শলী বনানী, বাখুয়া, ছোটো বাখুয়া, গজারিয়া, ভেটুয়াকান্দি এলাকায় আবাদী মাঠে ঘুরে দেখা গেছে সব মাঠেই রোপা আমন ধান ফসলে সবুজে ভরপুর হয়ে আছে।
একেক মাঠে একেক চিত্র দেখা গেছে। কোনো মাঠের বেশীর ভাগ জমির ধান ফসলে পাক ধরতে শুরু করেছে। ধানের ছড়া পুরোপুরি বেরিয়ে ধানে হলদে রং এসেছে। আরেক মাঠে ধান ছড়া বেরুচ্ছে। আবার অতি আগাম করে লাগানো দুএকটি জমির পাকা ধান কাটা হচ্ছে ।
সলঙ্গা ইউনিয়নের চরবেড়া মাঠে কৃষক আইনুল হক বিঘা চারেক পরিমাণ জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন। তিনি বেশী হারে ফলনশীল ব্রি ধান ৩৯ জাতের আবাদ করেছেন। এখন ধানের ছড়া বেরুচ্ছে । পোকার ক্ষতি থেকে জমির ধান ফসল রক্ষায় নিজেই কীটনাশক ঔষধ স্প্রে করছিলেন। এ সময় প্রতিবেদককে বলেন এলাকার কীটনাশক ঔষধ দোকানীদের সাথে পরামর্শ করে তাদের বলে দেওয়া কীটনাশক ঔষধ স্প্রে করছেন। বিভিন্ন মাঠের জনা দশেক কৃষকের সাথে রোপা আমন ধান ফসলের আবাদ নিয়ে আলাপকালে বলেন সবারই আশা ধানের ফলন ভালো হারে মিলবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সূবর্ণা ইয়াসমিন সূমী বলেন কৃষি প্রণোদনায় ১ হাজার ৪০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে তার বিভাগ থেকে বিনামূল্যে রোপা আমন ধান বীজ ও রাসায়নিক সার দেওয়া হয়েছিলো। প্রতিজন কৃষককে ৫ কেজি করে ধান বীজ এবং দশ কেজি এমওপি ও এমওপি দশ কেজি করে দেওয়া হয়।তিনি আশা করছেন উল্লাপাড়ায় এবারের মৌসুমে ভালো হারে রোপা আমন ধানের ফলন মিলবে।