সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আধুনিকতার ছোঁয়া
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য মহিষের গাড়ি
আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মহিষের গাড়ি। এক সময় গরু বা মহিষের গাড়িতে মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এমনকি সামাজিক অনুষ্ঠানে সকল শ্রেণির মানুষ যাতায়াত করতেন।
সিরাজগঞ্জের গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের রায়গঞ্জ, তাড়াশ উপজেলায় কৃষকরা তাদের জমিতে উৎপাদিত ফসল পরিবহনের জন্য এবং ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী আনা-নেওয়ার কাজেও ব্যবহার করতেন এই মহিষের গাড়ি।
৮০-৯০ দশকে গরু বা মহিষের গাড়ির প্রচলন থাকলেও বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় মানুষ এখন মহিষের গাড়ি রেখে নছিমন, ট্রেন, বাস, আর ট্রাকের সাথে উন্নততর জীবন পরিচালনা করছেন।
- বর্তমানে তেমন আয় রোজগার না থাকলেও গভীর মায়া আর শখের বসেই বর্তমানে এই কাজ করে আসছি।
- আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় মানুষ এখন মহিষের গাড়ি রেখে নছিমন, ট্রেন, বাস, আর ট্রাকের সাথে জীবন পরিচালনা করছেন।
মহিষের গাড়িতে যেখানে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত করতে দিন পেরিয়ে যেত। সেখানে এখন আধুনিক পরিবহন ব্যবহারে সময় লাগে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এ কারণে মহিষের গাড়ি তেমন আর দেখা যায় না।
তবে সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছী এলাকার কলেজ রোডে মহিষের গাড়ি দেখা মেলে। কথা হয় গাড়িয়াল রবিউল ইসলামের সাথে।
তিনি তার দুঃখ-দুর্দশার কথা বলেন, ছোটবেলা থেকে বাবার সাথে এই মহিষের গাড়ি চালাতে মহিষগুলোকে আপন করে নিয়েছি। বর্তমানে তেমন আয় রোজগার না থাকলেও গভীর মায়া আর শখের বসেই বর্তমানে এই কাজ করে আসছি।
তিনি আরও জানান, সময় বেশি লাগায় মহিষের গাড়ি রেখে মানুষ এখন নছিমন, করিমন, অটোরিকশা ব্যবহার করছে।
রোজগারের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, কাজ পেলে দিনে সর্বোচ্চ খরচ বাদে এক হাজার টাকা ইনকাম করা যায়। কিন্তু প্রতিদিন কাজ পাওয়া যায় না। ফলে এই পেশা বাদ দিয়ে অন্য কাজ করছেন অনেক গাড়িয়াল।
তাছাড়া নিজেরা না খেয়ে থাকলেও অবলা এই প্রাণীদের (মহিষ) প্রতিদিন ঠিকই খাবার দিতে হয়। খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের খাদ্য কেনা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার আর সহজলভ্যতায় হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শুধু পাঠ্যবই পড়ে জানতে পারবে বলে ধারণা করছেন সচেতন মহল।