নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্ব শোভন কর্ম দিবস
মানবাধিকা প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত জরুরি
শ্রমিকের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়টি অন্যান্য ইস্যুর তুলনায় অনেকটাই উপেক্ষিত; দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারায়ণগঞ্জে এক শ্রমিক সমাবেশ এসব কথা বলেন শ্রমিক নেতার বক্তারা।
শ্রমিক নেতারা বলেন, দেশে শ্রমিকের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়টি অন্যান্য ইস্যুর তুলনায় অনেকটাই উপেক্ষিত। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকার গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম পাইলট আকারে শুরু করেছে। এই কার্যক্রম সব শ্রমিকের জন্য চালু করতে হবে।
বিশ্ব শোভন কর্ম দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরে ওই শ্রমিক সমাবেশ আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন (এনজিও) কর্মজীবী নারী (কেএন)। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রিকশা শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা হয়। এতে সহযোগিতা করে দাতা সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ। দিসবটির স্লোগান, ‘শোভন কর্ম পরিবেশের নিশ্চয়তা, টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার অঙ্গীকার।’
- অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে এখনো শ্রমিকদের জন্যও চুক্তিপত্র, পরিচয়পত্র, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, সাপ্তাহিক ছুটি ও ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নেই
- শ্রমিকের সময়োপযোগী ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতর সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবি
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে এখনো শ্রমিকদের জন্যও চুক্তিপত্র, পরিচয়পত্র, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, সাপ্তাহিক ছুটি ও ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নেই। শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে এগুলো নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।
কর্মজীবী নারীর সমন্বয়ক রাজীব আহমেদের সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রমিক নেত্রী নারগিস আক্তার।
তিনি বলেন, সব শ্রমিকের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ, ন্যূনতম বাঁচার মতো মজুরি নিশ্চিত করতে পারলেই শোভন কর্মদিবস পালন সার্থক হবে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দেন গার্মেন্ট শ্রমিক শিলা রানী, নদী খাতুন, রিপা আক্তার, নারায়নগঞ্জ ক্যাফে ম্যানেজার রুম্পা রেজা, সুলতানা সুমি, সচিন চন্দ্র দাস।
সমাবেশ শেষে শতাধিক শ্রমিকের একটি বর্ণাঢ্য রিকশা শোভাযাত্রা নারায়নগঞ্জ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিসিক এলাকায় দিয়ে শেষ হয়। পরে বিকেল ৩ টার দিকে নারায়নগঞ্জ উইমেন ক্যাফেতে একটি আলোচনা সভা হয়। এতে বিসিকের শ্রমিকরা অংশগ্রহণ করে নিজেদের দাবি তুলে ধরেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতের এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শ্রমিকের সময়োপযোগী ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে হবে, সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখনও পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য বিদ্যমান। শুধু বৈষম্য নয়, ঘর থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত নারীরা বিভিন্ন রকম সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। তাই সবক্ষেত্রে নিরাপদ ও নারী বান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বক্তারা নির্যাতনমুক্ত পরিবার, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলতে ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে আইন প্রণয়ন ও আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুসমর্থন করার জোর দাবি জানান।
পিডিএস/এলএ