মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস,সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিংগাইরে কাগজপত্র ছাড়াই চলছে ইব্রাহীম মেমোরিয়াল হাসপাতাল
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সাহরাইল বাজারে অবস্থিত সেভেন স্টার টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই চলছে ইব্রাহীম মেমোরিয়াল নামের হাসপাতাল। ভেতরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম চালু থাকলেও হাসপাতালের বালাইমাত্র নেই। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও রয়েছে নিরব।
রোববার (১৩ অক্টোবর) সরেজমিন জানা যায়, সাহরাইল বাজার স্ট্যান্ডে সেভেন স্টার টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় ইব্রাহীম মেমোরিয়াল হাসপাতালের সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ভেতরে ঢুকতেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম চোখে পড়ে।সেখানে নাম দেখা যায় মমতাজ ইব্রাহিম মেমোরিয়াল মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার ।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মনির হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে হাসপাতালের পরিবর্তে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা প্রসঙ্গে বলেন, পূর্বে হাসপাতালের কার্যক্রম চালু থাকলেও কাগজপত্র করতে না পারায় বর্তমানে শুধু ডায়াগনস্টিক চালু রয়েছে।
আশপাশের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি চলছে কাগজপত্র বিহীন। এক্সরে কক্ষের রেডিয়েশন যাতে বাইরে যেতে না পারে তারও কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটির মালিক এখানে চেম্বার করেন, ব্যবস্থাপত্রে রোগীদের অধিক পরিমানে পরীক্ষা- নিরীক্ষা দিয়ে থাকেন। প্যাথলজিক্যাল টেস্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয় অতিরিক্ত অর্থ। এতে সেবা নিতে আসা রোগী সাধারণ প্রতিনিয়ত ভোগান্তিসহ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আর এ প্রতিষ্ঠানটি সুরক্ষায় দায়িত্ব পালন করে থাকেন পার্শ্ববর্তী সেলিনা নামের এক ইউপি মেম্বার।স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এদিকে, প্রতিবেদক প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারের কাছে ডিজি হেলথ, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ও পরিবেশের ছাড়পত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে দেখাতে পারেননি।
তিনি বলেন,এটার মালিক ডা.সাদেক খানের কাছে রয়েছে বলে দাবী করেন। সেই সঙ্গে তিনি জরুরী কাজে বাইরে আছেন বলেও জানান।
এদিকে, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে কোনো ডাক্তার, নার্সের দেখা মেলেনি। এক্সরে ও প্যাথলজি টেকনোলজিস্ট খোঁজ করলে আব্দুর রাজ্জাক নামের একজন নিজেকে প্যাথলজি টেকনোলজিস্ট বলে দাবী করেন। কিন্তু তিনি সার্টিফিকেট বা দক্ষতা বিষয়ক কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
তবে এক্সরে টেকনোলজিস্টের ব্যাপারে জানান, সংশ্লিষ্টরা আজকে অফিসে আসেননি।
মমতাজ ইব্রাহিম মেমোরিয়াল মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. এম.আর খান সাদিক বলেন,আমাদের এটা তো এখন ডায়াগনস্টিক সেন্টার করেছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবই রয়েছে শুধু সাইনবোর্ডটি নতুন করে টাঙানো হয়নি। এ ছাড়া অন্যান্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন তিনি ।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দা তাসনুভা মারিয়া বলেন, আমি একটা টিম তদন্তে পাঠাচ্ছি। কাগজপত্র না পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে ।