প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১১ অক্টোবর, ২০২৪

বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ

মাতৃরূপে পূজিত হলেন কুমারী

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গণ্ডগ্রাম শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে কুমারী পূজায় শুক্রবার কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয় নিভৃত মন্দির সাহাকে। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমী তিথিতে শুক্রবার সকালে মন্ডপগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে কুমারী পূজা। এ দিন কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীরূপ কল্পনা করে পূজা করেন সনাতন (হিন্দু) ধর্মালম্বীরা। এ উপলক্ষে সকাল থেকে ভক্তরা মন্দির প্রাঙ্গনে ভিড় করতে শুরু করেন। পরে ঢাক-ঢোল, শঙ্খ ও উলু ধ্বনিতে মন্দির প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠতে শুরু করে।

হিন্দু শাস্ত্রমতে, কুমারী পূজার উদ্ভব হয় কোলাসুরকে বধের মধ্যদিয়ে। কোলাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবরা মহাকালীর শরণাপন্ন হন। এ সব দেবদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেবী কুমারী রূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকে মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। আমাদের বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

বগুড়া প্রতিনিধি জানান, জেলার শাজাহানপুর উপজেলার গ-গ্রাম শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে গতকাল সকালে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ জন্য মাতৃভাবের পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে এ বছর কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয় ৮ বছর বয়সী নিভৃত মন্দির সাহাকে। তার বয়স ৮ বছর হওয়ায় উমা নামে পূজিত হন। পূজা কার্যক্রম পরিচালনা করেন আশ্রমের পুরোহিত বাসুদেব ব্যানার্জী।

নিভৃত মন্দির সাহা বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ও শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক মিল্টন কুমার সাহার মেয়ে। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে মা হিসেবে পূজা করে পূরো নারী জাতিকে সম্মান দিতে পারছি, যা নিশ্চয় সৌভাগ্য।’

বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১২টি উপজেলায় ৬৩০ ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে প্রশাসন এবং মন্দির কমিটির পক্ষ প্রস্তুতি রয়েছে। আগামীকাল রবিবার বিজয়া দশমীর মাধ্যমে দুর্গোৎসব শেষ হবে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান,জেলা শহরের চাষারা রামকৃষ্ণ মিশনে নানা আয়োজনে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমারী দেবীকে অঞ্জলি দেওয়ার মধ্য দিয়ে পূজা অর্চনা শুরু হয়। এবারের কুমারী পূজায় দেবীর আসনে বসিয়ে পূজা দেওয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলের শিশু শ্রেণির ছাত্রী ৭ বছরের সুনন্দা চক্রবর্তীকে। সে শহরের বংশাল রোড়ের সঞ্জয় চক্রবর্তী ও দিপাণ্বিতা চক্রবর্তীর মেয়ে।

কুমারী পূজা পরিচালনা করেন নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী একনাথানন্দ মহারাজ। তিনি বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ শারদীয় দুর্গোৎসবে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু করেন। দেবীকে জাগতিকভাবে পূজা করতে শত বছর ধরে এ কুমারী পূজা পালন করা হচ্ছে। সনাতন ধর্মের নিয়ম অনুসারে দেবীকে শিশুরূপে মায়ের আসনে পূজা করা হয়।

কালীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান,উপজেলায় ৯৯টি মন্দিরে পালিত হয়েছে মহাঅষ্টমীর কুমারী পূজা। গতকাল সকাল ৭টা থেকে পৌনে ৮টা পর্যন্ত এ পূজা হয়। পূজা শেষে উপস্থিত ভক্তের মধ্যে প্রসাদ বিতরনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় কুমারী পূজা।

উপজেলার হরিসবা মন্দিরের অর্থসচিব পলাশ মুখার্জি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে পূজার সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছি। প্রতি বছরের মতো এবারও সুষ্ঠভাবে পূজা উৎযাপন হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম জানান, ‘পূজার নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রতিটি মন্দিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পূজা,বগুড়া,নারায়ণগঞ্জ,কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ,কুমারী পূজা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close