লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বাজারে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে বিদ্যুৎকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হন যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী। এবার জামিনে বেড়িয়েই উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সদরের স্মৃতিসৌধের সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে এই মানববন্ধন হয়।

এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে গ্রেপ্তার হন যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী। তিনি উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও মহিষখোচা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। অভিযোগ উঠেছে, মামলার প্রতিশোধ নিতে ‘বিদ্যুৎ অফিসের দালাল’ খ্যাত স্থানীয় ইলেক্ট্রেশিয়ানদের সংগঠিত করে ডেপুটি জোনাল ম্যানেজার (জিএম) আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেন জিন্নত আলী। এরই ধারাবাহিকতায় তার নেতৃত্বে মানববন্ধন করেন স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ান ও যুবলীগ নেতার আত্মীয় স্বজনরা।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী দীর্ঘদিন ধরে মহিষখোচা বাজারের ওয়ার্কসপ ও ১৫-২০টি দোকানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। খবর পেয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বাজারে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে, লোকজন নিয়ে বিদ্যুৎকর্মীদের ওপর হামলা চালান তিনি। এ সময় আহত ৯ জন বিদ্যুৎকর্মীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে থানা-পুলিশ ও সেনাসদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে বিদ্যুৎকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী ও তার ছেলে রুবেল মিয়ার (১৯) নামসহ অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাঁধাসহ কয়েকটি ধারায় থানায় একটি মামলা করেন আদিতমারী জোনাল অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ জালাল। এ মামলায় গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা কয়েকদিন হাজতবাস করে আদালত থেকে জামিনে বেড়িয়ে আসেন।

গতকাল মানববন্ধন শেষে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন যুবলীগ নেতার স্বজন ও ইলেকট্রিশিয়ানরা। এ সময় মহাসড়কের ইভয় পাশে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে যানযট সৃষ্টি হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন যুবলীগ নেতার চাচা স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ান ছকমল হোসেন, প্রতিবেশি রাব্বুল, যুবলীগ কর্মী মোস্তাকজামান পিপলু প্রমুখ।

জানতে চাইলে আদিতমারী জোনাল অফিসের জেনালের ম্যানেজার আইয়ুব আলী বলেন, ‘যুবলীগ নেতা জিন্নাত বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতার জোরে লাইনে হুক লাগিয়ে ওয়ার্কশপসহ বাজারে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ বিক্রি করেছেন। সেই অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মামলা করায় তিনি ক্ষেপে গিয়ে মানববন্ধন করতে পারেন। আমি যা করেছি, তা বিধি সম্মতভাবে করেছি। বদলি দেওয়ার দায়িত্ব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। আমি এতে বিচলিত নই।’