ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ফুলবাড়ীর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি 

ক্ষতিপূরণের ‘মিথ্যা আশ্বাস’, কয়লা খনির গেটে বিক্ষোভ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ক্ষতিপূরণ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে উপজেলার বড়পুকুরিয়া হামিদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত কয়লা খনি প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।

ক্ষতিপূরণের নামে ‘মিথ্যা আশ্বাসের’ অভিযোগে রবিবার সকাল ১০টার দিকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভের আয়োজন করে ‘জীবন ও বসত ভিটা রক্ষা কমিটি’। কমিটির সভাপতি মো. মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে এতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার কয়েকশ নারী-পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। এতে কমিটির সভাপতি বলেন, গতকালের সমাবেশের পর চার দফা দাবি মেনে না নিলে, অক্টোবরের ৯ তারিখে কঠোর আন্দোলনসহ কয়লা খনি ঘেরাও করা হবে।

৪ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে আগের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফাটাবাড়ির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ধোকাবাজি, মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে চৌহাটিবাসীকে বোঝানো বন্ধ করতে হবে। কয়লাখনি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় চৌহাটি এলাকাবাসির সঙ্গে সমঝতা চুক্তির শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে। চৌহাটিবাসীর চলাচলের রাস্তা মেরামত করতে হবে।

বসত ভিটা রক্ষা কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘কয়লা উত্তোলনের কারণে চৌহাটি এলাকায় প্রায় দেড় হাজার বাসাবাড়ি কম্পনে ফেটে গেছে। আমরা ৪ দফা মেনে নেওয়ার জন্য খনি কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এই এলাকার ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা তোলার কারণে প্রতিনিয়ত দেবে যাচ্ছে। আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে আর কতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই গ্রামে বসবাস করব?’

সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে তৎকালীন খনি কর্তৃপক্ষ, পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংসদ সদস্যকে অবগত করা হলেও, আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। খনি স্থাপনের ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাভবান হলেও, খনি এলাকার গ্রাম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

চৌহাটি গ্রামে বসবাসরত মোসলেমা বেগম, মালেকা বেগম, আলিমুদ্দিন, গোলাম রহমান ও মাসুদ আলী জানান, এলাকার নলকূপগুলোতে পানি উঠছে না, সেই সঙ্গে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এলাকাবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, স্কুল-কলেজে যাওয়ার রাস্তা থাকলেও বর্ষাকালে চলাচল করা সম্ভব হয় না। রাস্তার বেহাল থাকায় অ্যাম্বুলেন্সও এই গ্রাম আসতে চায় না। তারা এর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চান।

প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন বিষয়ে জানতে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ‘এলাকায় খনির প্রভাব বুঝতে সার্ভে টিম গঠন করা হয়েছে, পর্যাক্রমে সার্ভে করে অতিদ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামগুলির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে। আমরা ইতি মধ্যে ৮টি গ্রামকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করেছি।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close