খলিলুর রহমান, ভালুকা (ময়মনসিংহ)
ময়মনসিংহের ভালুকা
মামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ, কর্মকর্তারা বলছেন ‘উদ্দেশ্যমূলক’
ময়মনসিংহের ভালুকায় বন বিভাগের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা, ঘুষ, চাঁদাবাজি অভিযোগ তুলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ লোকজন। একই সঙ্গে তারা ভালুকার রেঞ্জ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদ খান ও কাদিগড় বিট কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খানের বিচারের দাবি করেছে। তবে ‘হয়রানিমূলক মিথ্যা’ মামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বনবিভাগের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বন ভূমি জবর দখলকারী কিছু লোক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিক্ষোভ করছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সিডস্টোর বাজারের সামনে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। এতে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন হাতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এলাকার ভুক্তভোগীরা।
ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুব্ধরা। মহাসড়ক থেকে বিক্ষুব্ধদের সরে যেতে সেনাবাহিনীও সহায়তা করে। তোফায়েল ইবনে জামালের সভাপতিত্বে সমাবেশের সঞ্চালনা করেন মঞ্জুর মাহমুদ। এতে বক্তব্য দেন সাবেক ইউপি সদস্য কামাল হোসেন, আব্দুর রউফ, শাহজাহান সিরাজ, আবুল হোসেন মাস্টার, নাসির উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
- ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধরা
- বনভূমির দুটি মৌজায় লাগানো ১ লাখ ৩৪ হাজার চারা উপড়ে দখলকারীরা
- অভিযোগ না থাকা ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস ইউএনওর
বক্তারা বলেন, জনগণকে ঘরবাড়ি নির্মাণে হয়রানি ও মামলা দেওয়া যাবে না। আদালতে চলমান মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বনায়ন করা যাবে না।
জানতে চাইলে হয়রানিমূলক মামলা, ঘুষ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদ খান। তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমে হবিরবাড়ী ও পাড়াগাঁও মৌজায় ২০ ধারায় গেজেট ভুক্ত বন ভূমিতে বন বিভাগ ১ লাখ ৮৭ হাজার চারা রোপন করি। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৩৪ হাজার চারা জবর দখলকারীরা উপড়ে ফেলে। এ ব্যাপারে পুলিশিসহ বিভাগীয় মামলা হয়েছে। এ কারণে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধন করেছে।’
ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বন ভূমি জবর দখলকারী কিছু লোক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বনবিভাগের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। বন বিভাগ কারো বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা করে না। বরং তারা (মানববন্ধনকারীরা) বন ভূমি জবর দখল করে আছে। বনের রোপিত চারা উপড়ে ফেলে সরকারি সম্পদের ক্ষতি করেছে। তবে সরকারি সম্পদের ক্ষতিকারীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’
ভালুকা ইউএনও আলীনুর খান বলেন, ‘বন বিভাগ যদি কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে থাকে, তাহলে তদন্ত করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নাই তাদের যেন অব্যাহতি দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যাতে মিথ্যা মামলা না হয়, এ ব্যপারে আরো সতর্ক হওয়ার জন্য স্থানীয় বন কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানানো হবে।’