আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলী
সড়ক ভেঙ্গে লেকে বিলীন
বরগুনার আমতলী পৌরসভার একেস্কুল সলগ্ন পল্লবী সড়কটি সংস্কারের অভাবে ভেঙ্গে পাশ্ববর্তী লেকের পানিতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে ভাঙ্গনে পুরো সড়ক ধসে পড়লে দুটি ওয়ার্ড ও বিদ্যালয়গামী শত শত শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার পৌরবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
আমতলী পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারী একেস্কুল-বটতলা পর্যন্ত পৌনে এক কিলোমিটার পল্লবী সড়কটি ২০১৬ সালে নির্মাণ করা হয়। এই সড়কের পাশেই রয়েছে আমতলী সরকারী একেহাইস্কুল এবং একেহাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। সড়কের উত্তর প্রান্তে রয়েছে পৌরভবন। সড়ক সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে ৩২ একরের বিশাল লেক। সড়কটি নির্মাণের সময় লেকের পানির ঢেউয়ের ভাঙ্গনের হাত থেকে সড়ক রক্ষার জন্য আংশিক জায়গায় সিমেন্টের শ্লাব ও খুটি দেওয়া হয়। তবে অনেক জায়গায় তা না দেওয়ায় এ বছর বর্ষা মৌসুমে সড়কের পাশ জুরে বিশাল তালগাছসহ ৫০ মিটার সড়ক ধসে লেকের পানিতে পরে যায়। সড়কের অর্ধেকের বেশি পরিমান ধসে পানিতে পরে যাওয়ায় এখন অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও পিকআপসহ ভারি যানবাহন চলাচল সম্পূর্ন বন্ধ রয়েছে। এতে পল্লবীবাসী তাদের নানা জিনিসপত্র পরিবহন এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে না পরায় ভোগান্তিতে পরেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির যে দশা হয়েছে তাতে আরেকটু ধসে পড়লেই সড়কটি দিয়ে মানুষসহ সকল যানবাহন চলাচল সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে যাবে। সড়কের পাশেই রয়েছে আমতলী সরকারী একেহাইস্কুল এবং একেহাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে অন্তত ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। এ ছাড়া সড়কের পাশে রয়েছে আমতলী পৌরসভার দুই ও তিন নম্ব ওয়ার্ড। দুই ওয়ার্ডসহ পৌরসভার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন ওই পথে চলাচল করে। সড়কটি সম্পূর্ন ধসে পড়লে দুই ওয়ার্ডসহ দুটি বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে। তাদের কয়েক কিলোমিটার ঘুরে অতিরিক্ত রিক্সাভাড়া দিয়ে পৌরভবনসহ শহরের বিভিন্ন্ জায়গায় চলাচল করতে হবে।
- প্রতিদিন ওই সড়কে চলাচল করে অন্তত ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী
- সড়কটি সম্পূর্ন ধসে পড়লে চলাচল সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে যাবে অভিযোগ
- শিগগির সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও
একেহাইস্কুলের শিক্ষার্থী শিরিন আক্তার বলেন, আমরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করি। সড়কটি ধসে যাওয়ার ফলে এখন অনেক ঝুকি নিয়ে রিক্সায় আমাদের চলাচল করতে হয়। যদি সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হয় তাহলে সড়কটি সম্পূর্ন ধসে পড়লে আমাদের এই সড়ক দিয়ে চলাচল সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে যাবে। এতে আমাদের শত শত শিক্ষার্থীদের দ্বিগুন রিক্সা ভাড়া দিয়ে অনেক পথ ঘুরে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে হবে।
রিক্সা চালক আলী হোসেন বলেন, ‘আগে আমরা এই রাস্তা দিয়া ঠিকমত রিক্সা চালাইতে পারতাম। ভাঙ্গনের পর এহন আমরা ভয়ের মধ্যে দিয়া এই রাস্তায় রিক্সা চালাই।’ পল্লবী এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী লিটন বলেন, পল্লবী সড়কটির যে অংশ ধসে পড়েছে ওই জায়গার এক পাশে লেক অন্যপাশে সরকারী পুকুর। এখন পুকুরের পার ধসে পড়লেই সড়কটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। এতে আমরা এই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পরবো।
পল্লবী এলাকার এক নারী বাসিন্দা মর্জিনা বেগম বলেন, পল্লবী সড়কের ৫০ মিটার সড়ক ধসে পরায় সড়ক দিয়ে ফায়র সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স এবং পিকআপ প্রবেশ করতে পারছে না ফলে আমরা এখন অনেক ভোগান্তিতে আছি।
দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মুছা মোল্লা বলেন, লেকের পারে গাইড ওয়াল না থাকায় সড়কটি ধসে পরেছে। এটি সংস্কারের জন্য বর্তমান পৌর প্রশাসকের নিকট প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, সড়কটি পরিদর্শন করে শিগগির সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।