জুয়েল রানা লিটন, নোয়াখালী
১০ বছর আগে জামায়াতের ৪ কর্মীকে হত্যা
কোম্পানিগঞ্জে কাদের মির্জা, সাবেক ইউএনওসহ ১১২ জন আসামি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১০ বছর আগে জামায়াত ইসলামীর ৪ নেতাকর্মীকে হত্যা অভিযোগে বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে আদালতে। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, (এসআই) আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস, উক্যসিং মারমার নামও আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার হত্যার শিকার সাইফুল ইসলামের বড় ভাই ও উপজেলা জামায়াতের কর্মী মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসেনর আদালতে এই মামলার আবেদন করেন। মামলার আবেদনে অজ্ঞাতনামা আরো ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কোর্ট ইন্সপেক্টর শাহ আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ইন্সপেক্টর শাহ আলম বলেন, নোয়াখালীর দ্বিতীয় আমলি আদালতের বিচারক মামলা আবেদন আমলে নিয়ে ওই ঘটনায় আগের কোনো মামলা আছে কি না, তা কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালতে অবহিত করতে বলেছেন। একই সঙ্গে মামলা না হয়ে থাকলে নিয়মিত মামলা হিসেবে (এফআইআর) রেকর্ড করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আবেদন সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার অবৈধ ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে দলের উপজেলা শাখা। ওই দিন বিকেলে কর্মসূচিতে অংশ নিতে আরো অনেকের সঙ্গে কেজি স্কুল মাঠে যান মামলার বাদী ও তার ভাই সাইফুল ইসলাম। পরে মিছিলটি অগ্রসর হলে মেয়র কাদের মির্জা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজনুর রহমান বাদল, সিরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মিকন নিজে এবং তাদের নির্দেশে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজম পাশা চৌধুরী রুমেল ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্নাসহ ৫০ জন মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় কাদের মির্জার ছোড়া গুলিতে সাইফুল ইসলামের বুকের বাম পাশে ও মিকনের ছোড়া গুলি তার পেট ছিদ্র করে বেরিয়ে যায়। সেদিন আবেদনের উল্লেখিত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জন আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
মামলায় আরো বলা হয়েছে, কোম্পানিগঞ্জের তৎকালীন ইউএনও মো. নুরুজ্জামানের নির্দেশে পরিদর্শ (তদন্ত) সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এসআই শিশির কুমার বিশ্বাস জামায়াত কর্মী মশিউর রহমান সজিবের ওপর গুলি করে। এসআই ঊক্যসিং মারমা সজিবের বুকের নিচে গুলি করে।
নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমির ইসহাক খন্দকার বলেন, ‘২০১৩ সালে কোম্পানীগঞ্জে জামায়াত ইসলামীর মোট ৭ জন নেতাকর্মী নিহত হন। ওই সময় তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ওই ঘটনায় উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। চারজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ও মামলা হয়নি। বর্তমানে আওয়ামী লীগে সরকারের পতনের পর ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চায় নিহতের স্বজনেরা।’