বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
সেতু নির্মাণে ধীর গতি, কলাগাছের ভেলায় পার
কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতে যশোরের শার্শার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। এরই মধ্যে বাগআঁচড়া-জামতলা-বালুন্ডা সড়কের মহিষাকুড়া ও মাখলার খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ এ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় প্রয়োজনীয় তাগিদে এ সড়ক ব্যবহারকারি মানুষের খালের এই অংশটুকু পারাপারের একমাত্র মাধ্যম দুইটি কলা গাছের ভেলা।
জানা গেছে, নির্মাণাধীন সেতুর কাজে ধীরগতি। তার ওপর টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কোমর পানি বিকল্প সড়কে। এ অবস্থায় পারাপারের একমাত্র অবলম্বন দুইটি কলাগাছের ভেলা। পানি বের হয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দিনের পর দিন ভোগান্তিতে উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্যস্ততম এই সড়কে চলাচলকারী মোটরসাইকেল, ভ্যান, বাইসাইকেল ও অন্যান্য ছোট ছোট যানবাহন, শিক্ষার্থী শিশু নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ কলা গাছের ভেলায় করে অতি কষ্টে পারাপার হচ্ছে। অতিদ্রুত খালের এ অংশটুকু পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থাসহ নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ করার দাবি জানান তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, বাগআঁচড়া-জামতলা-বালুন্ডা এ সড়কটি ব্যস্ততম হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। পাশাপাশি শার্শা, বাগআঁচড়া ও নাভারনে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করতে আসে। এছাড়া এলাকার শিক্ষার্থীরা চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। সৃষ্ট সমস্যার কারণে বাসিন্দারাসহ সেতুর দুই পাশের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে কলাগাছের ভেলায় করে পারাপার হচ্ছে। অনেক সময় ভেলা না থাকার জন্য সাঁতার কেটে পার হতে হয়। এখানকার নির্মাণাধীন সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করাসহ যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থার জোর দাবি জানান তারা।
মহিশাকুড়া গ্রামের আব্দুল্লাহ বলেন, প্রয়োজনে রাত-দিন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। একদিকে সেতু নির্মাণে ধীর গতি অন্যদিকে প্রবল বর্ষনের ফলে জমে থাকা পানির ওপর দিয়ে ভেলায় চড়ে পার হতে হচ্ছে। ভেলা না থাকলে সাঁতার কেটে পার হই। আমাদের এ দুর্ভোগ যেন দেখার কেউ নেই।
শিক্ষার্থী বাপ্পি বলেন, ঝুঁকি নিয়ে ভেলা দিয়ে পানি পার হই। ভেলা থেকে পড়ে গেলে বই, খাতা ভিজে যায়। আর স্কুলে যাওয়া হয় না। আমরা এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি চাই।
শার্শা উপজেলা স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) প্রকৌশলী সানাউল হক জানান, ভারি ও অতি বৃষ্টির ফলে এলাকা ডুবে গেছে। যা মানুষের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পানি নিস্কাশনের মাধ্যমে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। সেতুটি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে তিনি জানান।