সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিংগাইরে প্রাথমিকে প্রশ্নপত্র সরবরাহে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আর এ আদায়কৃত অর্থ প্রশ্নপত্রের জন্য কিছু ব্যয় করে বাকি টাকা শিক্ষা অফিস সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৯৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। চারটি ক্লাস্টারে ভাগ করে ৪ জন সহকারী শিক্ষা অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা ৯ থেকে শুরু হয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। প্রতি প্রশ্নপত্র তৈরিতে শিক্ষা অফিস থেকে ১০ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। আর শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন সরবরাহ ব্যয় স্লিপ ফান্ডের টাকা থেকে খরচ করায় সাধারণ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট অফিস ও সহকারী শিক্ষা অফিসারদের পরষ্পর যোগসাজশে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫ হাজার ৮২০ জন শিক্ষার্থীর কাছ ৫৮ হাজার ২০০ টাকা উত্তোলন করা হয় বলে জানা গেছে। ওই টাকা প্রশ্নপত্র তৈরিতে কিছু খরচ করে বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
আটকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্তী রানী মন্ডল বলেন, প্রশ্নপত্র শিক্ষা অফিস থেকে দেয়া হয়েছে। এর ব্যয় স্লিপ ফান্ডের টাকা থেকে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে। প্রশ্নের মূল্য ও টাকার পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি বলতে পারেননি।
মোসলেমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান খান বলেন,পুরো প্রশ্ন স্যারেরা করে দিয়েছেন। অফিস থেকে প্রতি প্রশ্ন বাবদ ১০ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, প্রশ্ন বাবদ সর্বোচ্চ তিন টাকা খরচ হতে পারে। এর জন্য ১০ টাকা নেয়া অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক বলে মনে করেন তারা।
ঘোনাপাড়া ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল মান্নান বলেন,আগে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নপত্রের সরকারি রেট ছিল ১৫ টাকা । এখন যৌক্তিকভাবে যেটা নেয়ার সেটাই নিচ্ছি।
সাহরাইল ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার এস এম তকিবুল ইসলাম বলেন,পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ নিয়ে থাকলে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
সিংগাইর উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুলতানা আসমা খান বলেন, সরকারি নিয়ম না থাকলেও মাসিক সভায় শিক্ষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রশ্নপত্রের মূল্য নির্ধারণ করে স্ব-স্ব স্কুলের স্লিপ ফান্ডের টাকা থেকে ব্যয় করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, স্লিপ ফান্ডের টাকা স্কুলের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ব্যয় করার কথা। ওই টাকা প্রশ্নপত্র তৈরিতে খরচ করার সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে অযৌক্তিক হলে টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।