তানজিম ইসলাম, দোহার (ঢাকা)
গৃহবধূর মৃত্যুর পর গা-ঢাকায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন
দোহারে প্রেমের সূত্রে বিয়ে, দেড় বছরে লাশ হলেন গৃহবধূ
ঢাকার দোহার উপজেলার খালপাড় এলাকায় আমেনা আক্তার (১৮) নামে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। তিনি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানা গেছে। হত্যার অভিযোগে গত বুধবার তার বাবা দোহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমেনা মারা যান।
আমেনা উপজেলার কাজিরচর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে। সাত ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট ছিলেন। দেড় বছর আগে দোহার খালপাড় এলাকার পাঞ্জু হাওলাদারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে বিয়ে হয়।
আমেনার বাবা জানান, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমেনাকে ভালো চোখে দেখতেন না। তাকে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতন করেছে তারা। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আমেনার শ্বশুর তাকে খারাপ ইঙ্গিত দিতেন। এ নিয়ে গত রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে আমেনার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এর এক পর্যায়ে স্বামী পাঞ্জু, শ্বশুর খবির, শাশুরি ফাতেমা ও ননদ আমেনা বেগম মিলে আমেনাকে নির্যাতন করেন।
- রবিবার গৃহবধূকে নির্যাতন, মঙ্গলবার হাসপাতালে মৃত্যু
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বরিবার নির্যাতনের সময় আমার মেয়ের পেটে বারবার লাথি দিলে সে গুরুতর আহত হয়। অবস্থার অবনতি হলে ফাঁস নেওয়ার নাটক সাজিয়ে দোহার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেখানে গিয়ে আমার মেয়ের গলায় কোনো ফাঁস নেওয়ার কোনো চিহ্নই পাইনি। মঙ্গলবার ঢাকার একটি হাসপাতালে আমেনা মারা গেছে। ওরা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে আমেনার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তার আমেনার স্বামী পাঞ্জুর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে একাধিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাদের প্রতিবেশীরা জানান, আমেনার মৃত্যুর পর থেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছে।
গৃহবধূ হত্যার অভিযোগ সম্পর্কে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন,‘ আমেনা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’