এস এম রাফি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম)

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চিলমারীতে চায়না দুয়ারি জালে বেড়েছে মাছ শিকার, নীরব মৎস দপ্তর 

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালে ছেয়ে গেছে গোটা উপজেলা। প্রতিটি খাল-বিলে গেলেই দেখা মিলছে এসব জাল। এদিকে মৎস্য দপ্তরের কোনো খোঁজখবর নেই এসব বিষয়ে। তবে মৎস্য দপ্তরের দাবি, অভিযান অব্যাহত আছে।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি খাল বিলে এসব চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ ধরছেন অনেকেই। প্রশাসন তৎপর না হওয়ায় এসব দিন দিন বেড়েই চলছে।

অনিল কুমার নামে এক জেলে বলেন, ‘হামার বাপ-দাদার হাত ধরে মাছ ব্যবসায় এসেছি। মাছ শিকার প্রধান পেশা। স্থানীয়ভাবে আমাদের মাঝি (জেলে) বলে। এখন ডারকি জালের জন্য মাছ পাওয়া যায় না। যারা কখনও মাছ ব্যবসায় আসেনি তারাও ডারকি জাল নদীতে ফেলে রাখে। আর ওইসব জায়গায় আমরা জাল ফেলতে পারি না।

জেলে ধলু দাস বলেন, গ্রামের প্রতিটি বিল বা খালে গেলেই দেখবেন এই জাল। সব খানেই এখন এ নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করছেন অপেশাদার জেলেরাও। চিলমারী সরকারি কলেজের প্রভাষক জিয়াউর রহমান বলেন, চায়না দুয়ারি জালে শুধু মাছ নয়, অন্য জলজপ্রাণিও বের হতে পারে না। এই জালগুলো ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব জাল নির্মূল করা দরকার।


  • অভিযান অব্যাহত, দাবি মৎস্য দপ্তরের
  • এসব জাল বন্ধ না হলে মৎস্য ভাণ্ডারে বিপর্যয় নেমে আসার শঙ্কা স্থানীয়দের
  • চায়না দুয়ারি জালে শুধু মাছ নয়, অন্য জলজপ্রাণিও বের হতে পারে না

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান রানা বলেন, চায়না জালের বিরুদ্ধে কার্যক্রম অব্যহত আছে। গত সপ্তাহে রানিগঞ্জ ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে কিছু জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

জানা যায়, চীন দেশের লোকেরা খেতখামারে বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড় নিধনের জন্য ‘চায়না দুয়ারি’ জাল বা ডারকি জাল তৈরি করে। ১ থেকে দেড় ফুট প্রস্থ, ৪০ থেকে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ক্ষুদ্র ফাঁসবিশিষ্ট এই জাল। লোহা রিং দিয়ে ঢোলক আকৃতি ও মাঝে মাঝে চতুর্ভুজ আকারের লোহা দিয়ে তৈরি এই বিশেষ ফাঁদ। একটি করে জালে ৪০-৫০টি করে খোপ আছে। বিশেষ কৌশলে এই জালের দুই মাথা খুঁটির সঙ্গে বেঁধে খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের তলদেশ দিয়ে পেতে রাখা হয়। জালের কাঠামোতে লোহার থাকায় জালটি পানির তলদেশে পৌঁছায়। এই জাল ক্ষুদ্র ফাঁসের কারণে সেই পথ ধরে ছোট থেকে বড় যেকোনো ধরনের মাছ চলাচল করলে অনায়াসে জালের ভিতরে প্রবেশ করবে। এর প্রভাবে নদ-নদীতে মাছের প্রাচুর্য কমে যাচ্ছে। অচিরেই এসব জাল বন্ধ না হলে দেশের মৎস্য ভান্ডারে বিপর্যয় নেমে আসার শঙ্কা স্থানীয়দের।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুড়িগ্রাম,চিলমারী,নিষিদ্ধ,চায়না দুয়ারি জাল
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close