গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গোবিন্দগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ
তিন সাঁওতাল হত্যায় সাবেক এমপি কালামসহ জড়িতদের শাস্তি দাবি
গাইবান্ধায় গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবুল কালাম আজাদ, চিহ্নিত পুলিশ সদস্যসহ সব আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোবিন্দগঞ্জের চৌকি আদালত এলাকায় এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরে একই দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) স্মারকলিপি দেন বিক্ষোভকারীরা।
সাহেবগঞ্জ-বাগর্দাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মাস্টার, বার্নাবাস টুডু, সুব্রল হেমব্রম, প্রিসিলা মুরমু, রাফায়েল হাসদা, বৃটিশ সরেন, ময়নুল ইসলাম, হাসান মোর্শেদ দীপনসহ অন্যরা।
এর আগে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বেআইনীভাবে উচ্ছেদের সময় নিরীহ সাঁওতালদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তছনছসহ গুলিবর্ষণ করা হয়। হামলা-গুলিতে শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ নিহত হন, আহত হন অনেকেই। এ ঘটনায় থমাস হেমব্রমের করা মামলার নারাজি শুনানি চলছে আদালতে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) নারাজির শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে অংশ নেন গাইবান্ধা জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মুরাদুজ্জামান রব্বানী। শুনানি শেষে নারাজির আবেদন মঞ্জুর করে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত।
জানা গেছে বলেন, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বেআইনীভাবে উচ্ছেদের সময় নিরীহ সাঁওতালদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তছনছসহ গুলিবর্ষণ করা হয়। হামলা-গুলিতে শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ নিহত হন, আহত হন অনেকেই। স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতি ও সহায়তায় সন্ত্রাসীরা এসব বীভৎস কার্যকলাপ করে। পুলিশও সাঁওতালদের বাড়িঘরে প্রকাশ্যে অগ্নিসংযোগ করে।
এ দিকে ওই ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষ থেকে থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে তৎকালীন এমপি আবুল কালাম আজাদ, চিনিকলের এমডি আব্দুল আউয়াল, সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল, কাটাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রফিকসহ ৩৩ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ সেটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করে। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করলে ওই জিডিকে মামলা নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে পিবিআই ২০১৯ সালে ২৩ জুলাই মূল আসামিদের বাদ দিয়ে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোপত্র (চার্জশিট) দেয়। তবে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে নারাজি দেওয়া হয়। নারাজি আমলে নিয়ে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু সিআইডিও আবুল কালাম আজাদসহ মূল ১১ আসামিকে বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট দিলে ২০২১ সালের ২ নভেম্বর বাদি পক্ষ নারাজি করেন।