এস এম রাফি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম)
চিলমারীতে মারধরের প্রতিবাদ করায় হামলা যুবদল নেতার
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ষাটোর্ধ এক নারীকে মারধরের ঘটনায় যুবদল নেতা রেজাউল করিম ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-মানববন্ধন করেছে স্থানীয় লোকজন। তবে বুধবার দুপুরে এই কর্মসূচি শেষে ফেরার পথে প্রতিবাদকারীও ওপর হামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল উপজেলা পরিষদ চত্বরের মানববন্ধন শেষে থানাহাট ইউনিয়নের মজিদেরপাড় এলাকায় ফেরা পথে এ হামলা করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে রেজাউলের বাড়িতে হামলা করেছে। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের ছয়জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন স্কুলছাত্র লিমন মিয়া (১৫), সিদ্দিকুল ইসলাম (৪৪), দেলোয়ার হোসন (৫৩), ছকিনা বেগম (৬৫)। অপর পক্ষে ইকিদ্রস আলী (৫০) ও ইয়ার আলী (৫০)। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে শনিবার রাতে যুবদল নেতা রেজাউল করিম রাস্তা আটকে মালেকা বেগমকে (৬৫) মারধর করা হয়েছে বলে জানান তার ছেলে হাফিজুর। এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে কয়েকজন যুবদল নেতার নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে অভিযুক্ত রেজাউল করিম উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। অন্যরা হলেন আমিনুল ইসলাম (৪৫), মিজানুর রহমান (৩৮), ইসমাইল হোসেন (৩০)।
ভুক্তভোগী মালেকা বেগম উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মজিদের পাড় এলাকার শহীদুল ইসলামের সহধর্মিণী। তার পক্ষে গতকাল উপজেলার পাম্প মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলার পরিষদ চত্বরে গিয়ে মানববন্ধনে অংশ হয়। সেখানে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে স্থানীয় নারীপুরুষ বক্তব্য দেন।
ভুক্তভোগীর ছেলে হাফিজুর বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখনো মামলায় রূপান্তর করা হয়নি। অভিযোগ দেওয়ার কারণে আমাদের বিভিন্ন সময় হুমকিধামকি দেওয়া হচ্ছে।’
ভুক্তভোগী মালেকা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে খুঁজতে আমি পাম্পের মোড়ে গিয়েছিলাম। বাড়ি ফেরার পথে রেজাউল আমার পথ রোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে, এক পর্যায়ে সে আমাকে ধাক্কা মারলে পাশের বেঞ্চের উপর পরে যাই। এরপর সে আমার গালে চড়থাপ্পড় মারতে থাকে। এ সময় আমার ছেলে ও তার স্ত্রী এগিয়ে এলে তাদেরও চর থাপ্পড় মারতে থাকে তারা। পরে স্থানীয়রা রেজাউলের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।’
জানতে চাইলে যুবদল নেতা রেজাউল করিম বলেন, ‘অতর্কিত হামলার বিষয়টি মিথ্যা। বরং তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বাড়িঘর ভেঙে দিয়েছে।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার শিরিন বলেন, ‘বৃদ্ধাকে যুবদল নেতার মারধর ও আজকে (বুধবার) বিষয়টি শুনেছি। দলের সভাপতির সঙ্গে কথা বলে জানানো হবে।’
জানতে চাইলে চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘হামলার ঘটনা শোনার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখন পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।’ মামলা বিষয়ে ওসি বলেন, ‘নারীর পরিবার যেভাবে অভিযোগ দিয়েছে, তাতে মামলা হয় না। পরে আমরা সেটি কোর্টে পাঠিয়েছি। এখন কোর্ট থেকে অনুমতি এলে মামলা হবে।’