বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি

  ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিএনপির ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৬, দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর

বড়াইগ্রামের চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে গতকাল রবিবার ভাঙচুরের শিকার ঘর। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

গত রবিবার সন্ধ্যায় চান্দাই ইউনিয়নের দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ১৪টি দোকান ও ৯টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

আহতদের মধ্যে চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু (৪০), দলের কর্মী জাহিদ আলী (১৯). মশিউর রহমান (২৮), মামুন হোসেন (২২), সাগর হোসেন (২০), মেহেদী হাসান (২৫), আওয়ামঅ লীগ নেতা শাহিন মালিথাকে (৬০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান জানান, সদ্য গঠিত ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের মধ্যে কমিটি গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। সম্প্রতি ইউনিয়ন কমিটি গঠনের পরের দিনই বাতিলের দাবিতে সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে তার পক্ষের নেতাকর্মীরা। এই বিরোধের জেরে তারা দলীয় যে কোনো সভা তারা আলাদাভাবে করে আসছিলেন।

ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু জানান, শনিবার বিকেলে দাসগ্রাম বাজারে তার অনুসারী ছাত্রদলের কর্মী জনিকে (২৮) মারধর করে হাবিবুর রহমান ও তার সমর্থক কর্মী বাহিনী। এ ঘটনায় এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। রবিবার সন্ধ্যায় শতাধিক লোকজন নিয়ে ককটেল ফাটিয়ে ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে হাবিবুর রহমানের বাহিনী। পরে তারা দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ের ১৪টি দোকান ভাঙচুর করে ও লুটপাট করে। এ সময় তার বাড়িসহ কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

তবে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘রবিউল ইসলাম টিপু আওয়ামী লীগ নেতা জহুরুল মালিথা, মজিবুর রহমান, ইউসুফ সরদার যুবলীগ নেতা হান্নান সরদারসহ তাদের লোকজন আমার দোকান, যুবদলের কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এতে আমার সমর্থকরাও উত্তেজিত হয়ে তাদের কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করেছে।’

ক্ষতিগ্রস্ত একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ওসমান মোল্লা বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে সড়কে এসে দেখি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। কয়েকজনকে হেলমেট পরে গুলি করতে দেখেছি। আমি ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ফিরে এসে দেখি আমার প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে ও লুটপাট করা হয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মলয় কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আহতদের মধ্যে ছয়জনের শরীরে গুলির বা ককটেলের উপাদান বিদ্ধ রয়েছে মনে হচ্ছে। আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আযম খাঁন বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ এলাকা পরিদর্শন করেছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close