সিরাজুল ইসলাম আপন, ভাঙ্গুড়া (পাবনা)
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান দিলপাশার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
অপসারণ চাওয়া ইউপি সদস্যদের হুমকি, ডেকে নিয়ে সাক্ষর আদায়
নিরাপত্তা চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউএনও এবং থানায় অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অপসারণ চাওয়ায় উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আটজন সদস্যকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান। এমনকি বাসা থেকে ডেকে নিয়ে জোর করে মীমাংসাপত্রে দুই ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে গত রবিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সদস্যরা। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান দিলপাশার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২৮ আগস্ট দিলপাশার ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অপসারণ চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ১০ ইউপি সদস্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করতে ইউএনওকে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
এদিকে তদন্তের বিষয়টি জানার পর চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান গত বৃহস্পতিবার রাতে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাবাজ আলী ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আরিফুল ইসলামকে ‘ভয়ভীতি দেখিয়ে’ মীমাংসাপত্রে স্বাক্ষর নেন। এ সময় তিনি ইউপি সদস্যদের ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন।
ইউপি সদস্য সাবাজ আলী বলেন, তার বাড়ি ইউনিয়নে আদাবাড়ীয়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে লোকজন নিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান তাকে বাড়ি থেকে তুুলে নিয়ে হাটউধুনিয়া যায়। একইভাবে আরেক ইউপি সদস্য আরিফুলকে বাড়িতে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ জোর করে মীমাংসাপত্রে স্বাক্ষর নেয়।
ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম বলেন, তারা মীমাংসাপত্রে স্বাক্ষর দিতে চাননি। রাত দুইটার সময় চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান তার বাড়িতে লোকজন নিয়ে গিয়ে জোর করে স্বাক্ষর নেন।
জানতে চাইলে প্যানেল চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান হান্নান জোর করে পরিষদের দুই সদস্যের কাছ থেকে মীমাংসাপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন। তার অপসারণ চাওয়ায় চেয়ারম্যান তাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তারা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।’
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, জোর করে তিনি স্বাক্ষর নেননি। পরিষদের ৬ জন মেম্বরকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে স্বাক্ষর নিয়েছেন। তিনি বা তার কোনো লোকজন ইউপি সদস্যদের ভয়ভীতিও দেখায়নি।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল করিম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ নিয়ে ইউপি সদস্যরা থানায় এসেছিলেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, তিন বিষয়টি দেখবেন।