কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
কালীগঞ্জ শহরের সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত হয়নি, জনদুর্ভোগ চরমে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন রাস্তার দুই পাশ ও মোড়গুলো হকারদের দখলে রয়েছে। শহরের কালিবাড়ি মোড়, থানা সড়ক, নলডাঙ্গা ও হাসপাতাল সড়কের দুপাশে এই অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। অবৈধভাবে ফুটপাত দখল ও রাস্তার ওপর তিনস্তরের দোকান বসানোয় পথচারী যাতায়াত ও যান চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে।
বাজারের ব্যাবসায়ীদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলের নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা টাকা বিনিময়ে এসব দোকান বসিয়েছেন। এ নিয়ে কালীগঞ্জ পৌর বাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ স্থানীয় লোকজন একাধিকবার উপজেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধর্না দিয়েও ফুটপাত-রাস্তা দখল মুক্ত করতে পারেননি।
সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। আগে ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করতে না পারার পেছনে উপজেলা প্রশাসন এবং পৌর কর্তৃপক্ষ বরাবরই রাজনৈতিক নেতাদের দায়ী করেছে।
জানা গেছে, চলতি বছরে ১৪ আগস্ট পৌরসভার ২০-২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি দল ফুটপাত দখল করা ব্যবসায়ীদের ফুটপাত ও রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার মৌখিক নোটিশ দেয়। এতে শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলেন। পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে পৌর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থানান্তরিত করা হলে পরে ফুটপাত-রাস্তার ব্যবসায়ীরা দখল ছেড়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এর পর ২৫ দিন পার হলেও পৌর কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
রাস্তার ওপর ডাব বিক্রেতা মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমরা ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি পৌর কর্তৃপক্ষকে একটা নির্ধারিত স্থানে আমাদের জায়গা দেওয়া কথা বলেছিলেন। এরপর পৌরসভা থেকে আমাদের আর কিছু জানায়নি। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের একটা স্থান না দিলে আমরা না খেয়ে মরব।’
কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইলিশায় রিছিল। ফুটপাত-সড়ক দখলমুক্ত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সড়ক-ফুটপাত দখলমুক্ত করার ব্যাপারে আগে কী হয়েছে, আমি তা জানি না। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমি এ ব্যাপারে কথা বলব। জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুটপাত ও রাস্তা দখল মুক্ত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’