ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চাল আত্মসাদের প্রমাণ মিললেও বহাল তবিয়তে ইউপি চেয়ারম্যান 

ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টুর বিরুদ্ধে ভিজিএফ এর চাল আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। গত ১২ জুন তারিখে তার বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের ১১ সদস্য। উপজেলা প্রশাসনের তদন্তে চেয়ারম্যান কর্তৃক চাল আত্মসাতের প্রমাণ মিললেও বহাল তবিয়তে আছেন চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আতাউর রহমান মিন্টু। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। চালের ঘটনায় গত ১৫ জুন দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকায় 'ভিজিএফ তালিকায় মৃত ব্যক্তির নাম চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতা' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করে উপজেলা প্রশাসন। তদন্তে চেয়ারম্যান কর্তৃক চাল আত্মসাতের প্রমাণ মিললেও বহাল তবিয়তে আছেন ওই চেয়ারম্যান।

ইউনিয়ন পরিষদের ১১ সদস্যে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হতদরিদ্র পরিবারে জন প্রতি ভিজিএফ এর ১০ কেজি করে চাল বিতরণের লক্ষ্যে ৬ হাজার ৩৭৫ জনের তালিকা প্রণয়ন করা হয়। উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়নের সময় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যগণ নিজ নিজ এলাকার হতদরিদ্র মানুষের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবের নিকট হতে উপকারভোগীর তালিকা সংগ্রহ করে ইউপি সদস্যরা দেখতে পান তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। উপকারভোগীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত অনেক ব্যক্তিই তাদের অচেনা। তালিকার অনেক জায়গায় একই ব্যক্তির নাম ও মৃত ব্যক্তির নামও রয়েছে। জানতে পেরে বিতর্কিত তালিকার উপকারভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ কার্যক্রমে অংশ গ্রহনের অস্বীকৃতি জানান ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যগন। তারপরেও চেয়ারম্যান মিন্টু তাদের আপত্তিকে উপেক্ষা করে ওই তালিকা মোতাবেক উপকারভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ করেন।

আরো জানা গেছে, চেয়ারম্যান চাল আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে স্বেচ্ছাচারীভাবে তালিকা প্রণয়ন করে চাল বিতরণ করায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন সদস্য গত ১২ জুন তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। ওই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ঘটনার তদন্তে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা চাল আত্মসাতের ঘটনার সত্যতা পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গরীবের ঈদের চাল আত্মসাতের ঘটনার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে তাদের।

এদিকে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টুর মুঠো ফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহনুমা তারান্নুম বলেন, গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী,ভিজিএফ চাল,চাল আত্মসাত
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close