নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর ভাইকে ফোন, শব্দ করায় মেয়েকেও জখম
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী রোকসানা বেগমকে (৩২) চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়েছেন স্বামী নুর জামাল। এ সময় পাঁচ বছরের শিশুকন্যা জান্নাত ডাক-চিৎকার করলে তাকেও কুপিয়ে আহত করেন তিনি। শিশু জান্নাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মুমুর্ষূ অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে তারাবো পৌরসভার তেৎলাব এলাকায় শহীদ মিজির ভাড়াবাড়ির দুই তলায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। তবে ভোর সোয়া ৫টায় রোকসানার ভাইকে ফোনে কল করে করে ‘গুরুতর অসুস্থ’ বলে জানান জামাল। হত্যার শিকার রোকসানা বরিশালের তরিকাটা গ্রামের আমতলী থানার শাজাহান হাওলাদারের মেয়ে। ৮ বছর আগে রোকসানা আদমজী ইপিজেড এ কাজ করার সময় তাদের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে তারা বিবাহ করেন। এই দম্পত্তির একমাত্র সন্তান পাঁচ বছরের শিশু জান্নাত।
রোকসানার ভাই হাসান বলেন, তিনি একই বাড়ির পার্শ্ববর্তী রুমে ভাড়া থাকেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের পারিবারিক কলহ চলছিল। প্রায়ই সে রোকসানাকে মারধর করত। এক বছর আগে ঝগড়ার সময় তার মাথায় আঘাত করলে সেখানে ৭টি সেলাই করতে হয়। এরপর সেখান থেকে তাদের নিজের কাছে নিয়ে আসেন হাসান। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকেও তাদের ঝগড়া হয়। এরপর তারা একসাথে ঘুমিয়ে পরে।
হাসান বলেন, ‘ভোর সোয়া ৫টায় নুরজামাল আমাকে ফোন করে রোকসানা গুরুতর অসুস্থ বলে জানায়। তাৎক্ষণিক আমি গিয়ে দেখি ঘরের দরজা খোলা আমার বোনের নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। দাঁড়ালো অস্ত্রের আঘাতে আহত জান্নাত কাতরাচ্ছে। চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করেন। পরে দ্রুত জান্নাতকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। সে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।’
জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ) জুবায়ের হোসেন জানান, পারিবারিক বিরোধের জেরে নুর জামাল তার স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের নারায়ণগঞ্জের জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়া), মর্গে পাঠানো হয়েছে। নুর জামালকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পাশাপাশি হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।