মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
ক্রয় ক্ষমতার নাগালে ইলিশ আনার মডেল
জেলেরা মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে ইলিশ শিকার করেন। শর্ত অনুযায়ী কমমূল্যে শুধু মহাজনকে ইলিশ দিতে বাধ্য হন। মহাজনরা সিণ্ডিকেট করে ইলিশ মজুদ করে বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেন এবং ইচ্ছেমত মুনাফা লুটেন। এই অবস্থা থেকে ইলিশের দুষ্প্রাপ্যতা শুরু হয়। দাদন বা জিম্মি বন্ধ, জেলেদের স্বাবলম্বী করে ইলিশের বাজার সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে একটি মডেলের প্রস্তাব করেছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এর সদস্য (অর্থ) কাজী আবেদ হোসেন (যুগ্মসচিব)।
উল্লেখ্য, অতি সম্প্রতি তিনি দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল সৃষ্টি করেন যা সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন আছে।
স্বল্পমূল্যে ইলিশ ক্রয় ও দেশবাসীর নিকট ইলিশ সহজলভ্য করতে কাজী আবেদ হোসেন নিম্নরূপ প্রস্তাব দেন—
ক) জেলে, স্থানীয় আড়ৎ, বৃহৎ আড়ৎ (যেমনঃ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল), পাইকারি ক্রেতা/বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে আবশ্যিকভাবে রশিদের মাধ্যমে হস্তান্তর হবে। রশিদে মোবাইল নম্বর ও তারিখ থাকবে।
খ) নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও কোস্টগার্ড রশিদ যাচাই করে মূল্যসহ নিশ্চিত হবে যে, কোন স্তরে আড়ৎদার ২০ দিনের বেশি ইলিশ মজুদ করতে পারবে না।
গ) লাইসেন্স থাকলেও সরকারের অনুমতি ব্যতীত কার্গো বিমান বা জাহাজে ইলিশ রপ্তানি বা বাজারজাত করতে পারবে না।
ঘ) খুলনা, বরিশাল, চাঁদপুর হয়ে সপ্তাহে ৩ দিন রাত্রিকালীন যাত্রায় এক বা একাধিক জলযান নদী-সাগরের ইলিশ ও সম্ভব হলে অন্য মাছ বিনা ভাড়ায় ঢাকায় পরিবহণ করবে। ফিরতি পথে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পণ্য ঢাকা থেকে পরিবহণ করবে।
ঙ) দুষ্টুচক্র ভেঙে গেলে ইলিশ স্বল্পদামে সহজ প্রাপ্য হবে, দাদন বা জিম্মি করা বন্ধ হবে এবং জেলেরাও স্বাবলম্বী হবেন।
প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হলে ইলিশের সমৃদ্ধ অতীত ও ঐতিহ্য ফিরে আসবে বলে সংশ্লিষ্টগণ মনে করেন।