তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
ইউপি সদস্যকে বিবস্ত্র করে মারধর
তালতলীতে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বরগুনার তালতলীতে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. জামাল খানকে বিবস্ত্র করে মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিশান বাড়িয়া ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জামাল খান বাদী হয়ে এই আরজি করেন। পরে আদালতে বিচারক মো. আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
আরজিতে অভিযুক্তরা হলেন তালতলী উপজেলার আবুল কালাম, মিজানুর ওরফে টাচ মিজান, বশির উদ্দিন, সাংবাদিক নাঈম ইসলাম ও শাহাদাৎ হোসেন, আল-আমিন, জাফর দফাদার, খলিল, মাসুদ, বেল্লাল, ইব্রাহিমসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭-৮ জন।
মামলার বাদী জামাল খান বলেন, ‘আমি যাতে মামলা না করি, এজন্য আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে আসামিরা।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার বিবস্ত্র ভিডিও দেখিয়ে হুমকি দিয়ে টাকা চাইছে। মামলা করলে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে তারা।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুম্পা বলেন, ‘আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি। মামলার আদেশ পেলে তদন্ত-পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’
আরজি সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউপির সদস্য জামাল খানের বাড়ির সামনে নিদ্রা স্লুইচঘাট খালে একটি ইঞ্জিনচালিত স্টিলবডি চোরাই ট্রলার নোঙর করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি স্থানীয়রা ইউপি সদস্য জামাল খানকে জানালে তিনি ইউএনওকে জানান। পরে ট্রলারটি ইউপি সদস্যর জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন ইউএনও।
এদিকে খবর পেয়ে অভিুক্ত ব্যক্তিরা শনিবার রাত ১০টার দিকে চোরাই ট্রলারটি ছড়িয়ে নেওয়ার জন্য টাকার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলেও তারা ট্রলারটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। বাধা দেওয়ায় আবুল কালাম, মিজানুর রহমান, বশির, সাংবাদিক নাইম ও শাহাদাতসহ বগি, দা, রড দিয়ে ইউপি সদস্য জামাল খানকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এর একপর্যায়ে ইউপি সদস্যকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করা হয়।
পরে স্থানীয় বাসিন্দারা জামাল খানকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে তাদের নানারকম হুমকি দিয়ে যায় হামলাকারীরা। এতে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে থাকলে রবিবার দুপুরের দিকে ইউএনও তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।