শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি
মাগুরার শালিখা
ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন শামেলা-ছকিনার
কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে বা আধা পেট খেয়ে মাগুরার শালিখায় বড় বোনের দেওয়া মাত্র পাঁচ শতক জমিতে টিনের তৈরি ঝুপড়ি ঘরে বাস করেন ছকিনা ও শামেলা খাতুন। কয়েক বছর আগেও উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামে কর্মসূচির মাটিকাটা ও বাজারের হোটেলে রান্না ও গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে খরকুটা খুটে শামেলা-ছকিনার সংসার কোনোরকম চলতো। তবে শামেলার অসুস্থতা ও ছকিনার কাজ না থাকায় এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সতের বছর আগে স্বামী পরিত্যক্তা হয় ছকিনা পরে শামেলা এক বাদাম বিক্রেতার সঙ্গে বিয়ে দিলেও শামেলার অবস্থাও ছকিনার মতো হয়। তারপর থেকে তারা দুইজন এক সঙ্গেই বসবাস করছেন। ৫ শতক জায়গার ওপরে টিনের ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে চলছে রান্না ও থাকার কাজ। বৃষ্টি হলেই ভিজে যাচ্ছে ঘরের কাথাকাপড় ও বাসনকোসন। ঘরে ঢুকেই দেখা যায় ভাঙ্গা একটি খাটের ওপরে জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়ে আছে অসুস্থ শামেলা। পাশে বাঁধা আছে দুইটি ছাগল। একই ঘরে বসত করে শামেলা, ছকিনা ও তাদের একমাত্র সম্বল দুইটি ছাগল। পাশেই টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে চলে রান্নার কাজ। তবে একটুখানি বাতাস হলেই নড়বড় করে ঝুপড়ি ঘরের চাল। ভারি বৃষ্টিতে কাঁদা পানির সঙ্গে যুদ্ধ করতে তাদের।
মধ্যবয়সী ছকিনা জানান, স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে বাজারের হোটেলে রান্নাবান্না করে ও মাটি কাটা কাজ করে মাঝে মাঝে বাজার করতাম। কয়েক মাস ধরে কাজ না থাকায় বেশ কিছু ঠিকমতো চাল কিনতে পারিনা। এদিকে শামেলা বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। টাকার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারছি না তাকে।
প্রতিবেশি মোস্তফা লস্কর মুক্ত বলেন, চাউলের অভাবে মাঝে মাঝে তাদের দু বোনকে না খেয়ে থাকতে হয়। টাকা না থাকায় ঠিকমতো বাজার করতে পারে না। রোগব্যাধি হলে চিকিৎসা করাতেও পারে না তারা। মাঝে মাঝে আমরা চারপাশের লোকজন চাল, ডাল দিলে তারা খেতে পারে। সমাজের বিত্তবানরা এদের পাশে দাঁড়ালে খাবার খেয়ে বেঁচে থাকত তারা।
আড়পাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রিপন লস্কর বলেন, আমার পক্ষ থেকে যতদূর সম্ভব সহযোগিতা করি। তবে তাদের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।