সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কমে গেছে দেশি প্রজাতির মাছ

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

মৎস্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জে ভরা বর্ষা মৌসুমেও দেশি মাছের আনাগোনা কমে গেছে। নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর ডোবা ও জলাশয় গুলিতে এখন দেশি প্রজাতির মাছ খুব কমই পাওয়া যাচ্ছে। গত ৩০-৪০ বছরের ব্যাবধানে প্রায় অর্ধশতাধিক দেশি প্রজাতির মাছ এখন দেখা যায়না। তবে জেলায় দেশি জাতের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যেই নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, বর্তমানে জেলার বিভিন্ন জলাশয়ে পাঙ্গাস, সিলভার কার্প, জাপানী, রুই, গ্রাসকার্প, থাইপুটি, তেলাপিয়া, মিনারকার্প, থাই কৈ, আফ্রিকান মাগুর সহ বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি মাছ চাষ হচ্ছে। অধিক মুনাফা লাভের আশায় মৎস্য চাষীরা বিদেশী জাতের মাছ চাষের দিকে ঝুকেছে। বিগত ২০-২৫ বছর আগেও জেলার হাট বাজারে দেশী জাতের কৈ, মাগুর, শিং, বোয়াল, মৈল, পাবদা, চেলা, চিতল, বাতাসী, খৈলশা, পুটি, আইড়, বাঘাইর, রিঠা, বাউস, টাকি, টেংরা, সরপুটি, গোলশা, ভেদা, বেলে সহ প্রায় আড়াইশ জাতের দেশি ও সুস্বাদু মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু এখন সে মাছগুলি খুব কমই দেখা যায়।

জেলা সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের সোনাউল্লাহ, বেলুটিয়া চরের আব্দুর রাজ্জাক জানান, আগেকার দিনে প্রতিবছর বর্ষায় প্রচুর পরিমানে মাছ আসতো, অধিকাংশ মানুষই মাছ মেরে খেতো। তখন জাল পেতে নদী থেকে পোনা ধরতো না যে কারণে বর্ষার পানিতে পোনা ছাড়িয়ে যেতো বিভিন্ন নদী খাল বিল ও জলাশয়ে আর্শ্বিন কার্তিক মাসে প্রচুর পরিমান মাছ ধরা পরতো। জেলার স্থানীয় প্রবীন ব্যাক্তিদের মতে, কৃষি জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ও বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহারের ফলে নদী, নালা, খাল, বিল ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পানি বিষাক্ত হচ্ছে। আবার বিভিন্ন কারখানার বর্জ্যে পানিতে মিশে পানি বিষাক্ত করছে। ফলে দেশি মাছ মরে যাচ্ছে। এ ছাড়া এক শ্রেণির মৎস্যজীবি অবাধে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার করে দেশি মৎস্য প্রজজনে বাধার সৃষ্টি করছে।

জেলা সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজজন ও উৎপাদনবৃদ্ধির জন্য সদর উপজেলার বঙ্গবন্ধু সেতুর আপে চায়না বাধ-৩ এবং ডাউনে বেলকুচি উপজেলার মুলকান্দি পর্যন্ত ১২ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার জুড়ে অভযাশ্রম তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়লে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহীনুর ইসলাম জানান, জেলায় দেশি জাতের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যেই নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রচার প্রচারনা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে পোনা মাছ নিধন রোধে। জেলার নিমগাছি ও উল্লাপাড়াতে দুইটি হ্যাচারী স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩৪টি মৎস্য অভায় আশ্রম তৈরি করা হয়েছে। এই অভয় আশ্রম গুলিতে মা মাছ রক্ষার জন্য মৎস্য বিভাগ থেকে পাহাড়াদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন অতি দ্রুত এর সুফল পাওয়া যাবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিরাজগঞ্জ,ভরা বর্ষা,দেশি মাছের আকাল
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close