রংপুর ব্যুরো
রংপুরে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা
সারা দেশের ন্যায়কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়ে ব্যারাকে ফিরে গেছে রংপুরের পুলিশ। ফলে বন্ধ রয়েছে আইন শৃঙ্খলা কার্যক্রম সহ শহরগুলোতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ট্রাফিক সিস্টেম। এতে করে রংপুর মহানগরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক ব্যবস্থার দায়িত্ব নিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগে মহানগর জুড়ে এসেছে শৃঙ্খলা, খুশি সাধারণ মানুষ।
আজ বুধবার সকাল থেকে সন্ধা পযন্ত রংপুর নগরীর শাপলা চত্তর,জাহাজ কম্পানী মোড়, ডিসির মোড়, পায়রা চত্তর মর্ডান মোড় এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
উত্তরের ৮ জেলার প্রাণকেন্দ্র রংপুর মহানগর। ব্যবসা-বাণিজ্য চাকুরী সহ চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন হাজার হাজার মানুষ। ট্রাফিক পুলিশ ছাড়া এই শহরের আটো সাটো রাস্তায় যান চলাচলের শৃঙ্খলা ধরে রাখা যেন অকল্পনীয়। কিন্তু গেল দুদিন ধরে মহানগরের কোথাও নেই ট্রাফিক পুলিশ।
তাই শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের তরুণ শিক্ষার্থীরা। দিন-রাত সমানভাবে মহানগরীর শাপলা চত্বর, জাহাজ কম্পানি মোড়, পায়রা চত্বর, পৌর বাজার, ডিসির মোড় সহ বিভিন্ন ট্রাফিক পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে শিক্ষার্থীরা। দেশকে নতুনভাবে সাজাতে দেশের দায়িত্ব কাদে তুলে নিয়ে এই দায়িত্ব পালনে কোন ক্লান্তি নেই তাদের।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোটা আন্দোলনের আগে আমাদের যে বক্তব্যগুলো লেখা ছিল। আমরা নিজেরাই লেখাগুলো লিখেছিলাম। এখন এই দাবিগুলো কোটা আন্দোলনের সফল হয়েছে। এখন সেগুলো আমরা মুছে ফেলে দিয়ে। অসাম্প্রদায়িক চেতনাটা আমরা তুলে ধরতে চাচ্ছি। তিনি আরও বলেন,অসাম্প্রদায়িক সরকার গঠন চাচ্ছি আমরা। সে বিষয়ে মূলত আমরা প্রতিটি দেয়ালে দেওয়ালে লিখছি। যাতে করে আমাদের মনোভাব গুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে যায় বিস্তার লাভ করে। মূলত আমরা স্টুডেন্টরা কি চাচ্ছি সেটি তুলে ধরার জন্য আমাদের এই আজকের কর্মকান্ড।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌখিন বলেন, বাংলাদেশের সকল জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা রংপুরের যারা সবাই জমায়েত হয়েছি। আমরা রংপুরে যারা বিভিন্ন আকা আকি কে নিয়ে কাজ করছি। কোটা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে রংপুরে আমরা বিভিন্ন দেয়ালে আমাদের দাবী গুলো লিখেছিলাম। তারাই আমরা আবারও একত্রিত হয়েছি । সরকার পতনের আগ পর্যন্ত আমাদের যে দাবিগুলো ছিল সেগুলো মিশিয়ে আবারো নতুন করে। আমাদের পরবর্তী যে দাবিগুলো আছে সেগুলো লেখার জন্য সবাই এক হয়েছি। একটি অসাম্প্রদায়িক নতুন রাষ্ট্র চাই আমরা। এবং একটি অপর অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলের মধ্য দিয়ে যেন সরকার গঠন করা হয়। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশক সুন্দর গরতে আমরা সব সময় পাশে আছি থাকবো। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ ও দায়িত্ব পালনে খুশি পথচারীরা।
অভিভাবক হারুন অর-রশিদ হারুন বলেন,বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা নিজের তাজা প্রাণ দিয়ে রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করতে পারে সেটি দেখিয়েছে। আমি একজন অভিভাবক হিসেবে মনে করব আগামীতে য়ারা সরকার পরিবর্তনের পর বা সরকারের এক দফা দাবী বাস্তবায়নের পরে বিভিন্ন রাস্তা ঘাটে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে নি:শ^ন্ধে ভালো কাজ। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, অংশ নিচ্ছে তারাই বাংলাদেশকে নতুন পথ দেখাচ্ছে বলে মনে করেন এই শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ডক্টর তুহিন ওয়াদুদ, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর। নতুন বাংলাদেশ গড়তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন কর্মকাণ্ডগুলো পথ দেখাবে আগামী নেতৃত্বকে।