বর্জ্য অপসারণে সক্ষম উত্তর সিটি, দক্ষিণেও শেষের দিকে
পূর্ব ঘোষিত ছয় ঘণ্টায় শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। অন্যদিকে, ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৪টি ওয়ার্ডে বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
সোমবার (১৭ জুন) রাত ৮টা ২০ মিনিটে উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় পূর্ব ঘোষিত ছয় ঘণ্টায় ঢাকা উত্তর সিটির কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। সচেতন নাগরিকদের আন্তরিক সহযোগিতায় এটি করতে পেরেছি। আমি নগরবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আগামী দিনেও ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে জনগণ ও সিটি করপোরেশনকে একসাথে কাজ করতে হবে।’
যারা এখনো কোরবানি করেননি তাদের উদ্দেশ্যে মেয়র আতিক বলেন, যারা আজ ঈদের দিন কোরবানি দিতে পারেন নাই তাদেরকে আগামীকাল সকালের মধ্যেই কোরবানি সম্পন্ন করার আহবান জানাচ্ছি।
মেয়র আরও বলেন, ‘অনেকে সন্ধ্যার পর এমনকি রাতেও কোরবানি দিচ্ছেন তারা আমাদের হটলাইন ১৬১০৬ এ ফোন করে জানাবেন আমাদের কর্মীরা বর্জ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে।’
এদিকে, একই সময়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, রাত ৮টা পর্যন্ত ডিএসসিসির ৬৪টি ওয়ার্ড হতে কোরবানির পশুর শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। শতভাগ বর্জ্য অপসারণ হওয়া ওয়ার্ডগুলো হলো - ১, ২, ৪, ৫, ৭, ৯, ১০, ১২, ১৩, ১৬, ১৭, ১৯-৪১, ৪৩-৫৯, ৬১, ৬৩-৬৬, ৬৮-৭৫ নম্বর ওয়ার্ড।
ডিএসসিসির মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৭৫টি।
জানা যায়, দুপুর ২টা থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে রাত ৮টায় নির্ধারিত ৬ ঘণ্টায় সবগুলো ওয়ার্ডের শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন করে ডিএনসিসি। ডিএনসিসির সবগুলো ওয়ার্ড থেকে ঈদের দিন রাত ৮টা পর্যন্ত ২১০১ ট্রিপে প্রায় ১০৩৭৪ (দশ হাজার তিনশত চুয়াত্তর) মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
ডিএনসিসির বর্জ্য বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৫৪টি ওয়ার্ডের সকল এলাকার শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সরাসরি তদারকি করেন। দুপুর ২টায় মিরপুরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে মিরপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে তিনি কালশী, বনানী, গুলশান, হাতিরঝিল, মধুবাগ, মগবাজার, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, বাড্ডা, বারিধারা প্রগতি সরণিসহ উত্তরা এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম রাত ৮টা পর্যন্ত সশরীরে পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের তদারকি করার জন্য দশজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে দশটি গ্রুপ গঠন করা হয়। ১০টি গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ অন্যান্য বিভাগীয় প্রধানগণ। দশটি গ্রুপ ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে ১০ হাজারের অধিক কর্মী কাজে নিয়োজিত ছিল। গুলশান নগর ভবনে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের হট লাইন নম্বর ১৬১০৬।
পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি মেয়র বর্জ্য বিভাগকে এবং তদারকির জন্য গঠিত দশটি গ্রুপকে আগামীকালও কোরবানির বর্জ্য দ্রুত সময়ে পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিদর্শনে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির সকল বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
পিডিএস/এমএইউ