শফিকুল ইসলাম, রায়পুরা ও আল-আমিন মিয়া, নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রতিদিনের সংবাদকে একান্ত সাক্ষাতকারে সাবেক মন্ত্রী ও আ.লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু
"ক্লিন রায়পুরা, গ্রীন রায়পুরা বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর"
রাজধানী ঢাকার অদূরে তাঁত ও কৃষিনির্ভর নরসিংদী জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা রায়পুরা। সবজির ভালো ফলন ও তাঁত বুননের মেলা বলেও খ্যাতি রয়েছে এ উপজেলার। এ ছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে অনেক বেশি পরিমাণে সবজি, কলা ও দেশীয় ফল উৎপাদনেও রয়েছে এ উপজেলার সুনাম। আর এসব সবজি, কলা ও দেশীয় ফল শুধু উপজেলাতেই নয়, জেলার চাহিদা মিটিয়েও বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। মেঘনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁ নদী বেষ্টিত এ উপজেলাটি ১৯৭১ সালে ১২ ডিসেম্বর পাক হানাদার মুক্ত হয়। ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত রায়পুরা উপজেলাটির আয়তন প্রায় ৩১২.৫০ কি.মি.। যেখানে বসবাসকারী জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। বিশাল এই উপজেলাটিকে নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসন হিসেবে ধরা হয়।
এখানে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। আওয়ামী লীগ থেকে ধারাবাহিকভাবে মনোনয়ন নিয়ে টানা ষষ্ঠবারের মতো সংসদ সদস্য হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
এ ছাড়া ১৯৭০ সালেও সাধারণ পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছিল। দীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে মন্ত্রী হওয়ার স্বাদও পূরণ হয় এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের। ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও।
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বর্তমানে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্যের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। এ ছাড়াও তিনি ছাত্র রাজনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করার কারণে জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে দুইবার ভিপি নির্বাচিত হন এবং ৬ দফা আন্দোলনের অগ্রনায়কও ছিলেন তিনি।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ১৯৪৪ সালের ৯ ডিসেম্বর রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়ায় এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সঙ্গে দীর্ঘ আলাপকালে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বিভিন্ন প্রত্যয়ব্যক্ত করেন রায়পুরা উপজেলাকে নিয়ে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের ভিশনকে বাস্তবায়ন করতে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ উপজেলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনার সময় যে উন্নয়ন হয়েছে তার বিন্দুমাত্র উন্নয়নমূলক কাজ বিগত কোনো সরকারের আমলে হয়নি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মেঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল শ্রীনগর-বাঁশগাড়ী-মির্জাচর ইউনিয়নের একমাত্র যোগাযোগমাধ্যম মেঘনা নদীর উপর সেতু নির্মাণ করার জন্য ইতোমধ্যেই যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই মেঘনা সেতুর কাজ শুরু হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ষষ্টবারের মতো বিজয়ী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এখন আমার সর্ববৃহৎ উপজেলায় অসমাপ্ত উন্নয়ন মূলক কাজ সমাপ্ত করার প্রত্যয়ব্যক্ত করেন। এ লক্ষ্যে “ক্লিন রায়পুরা, গ্রিন রায়পুরা" স্লোগান নিয়ে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বর্ষীয়ান এই নেতা।