এম কবির, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে ধর্ষণ মামলার বাদীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার (বড় মনির) বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলার বাদীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সৌরভ পাল (২৯) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছালাম মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রাতে সৌরভকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি টাঙ্গাইল পৌর শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। মামলার বাদী কিশোরীর (১৮) ঝুলন্ত মরদেহ শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে সদর উপজেলার একটি এলাকায় নিজ বাসার তৃতীয় তলা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার রাতে তার বড় বোন বাদী হয়ে আপন বড় ভাই ও সৌরভ নামে এক যুবকের নামে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেন।
লাশ উদ্ধার হওয়া কিশোরী চলতি বছরের এপ্রিলে টাঙ্গাইল সদর থানায় আওয়ামী লীগে নেতা গোলাম কিবরিয়ার (বড় মনির) বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলার বাদী। বড় মনির টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের (ছোট মনির) বড় ভাই।
- টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন ওই কিশোরী।
- আপন বড় ভাই ও সৌরভ নামে এক যুবকের নামে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা কিশোরীর বড় বোনের।
মডেল থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া জানান, শনিবার রাতে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে (ধর্ষণমামলা করা) ওই কিশোরীর বড় বোন আপন বড় ভাই এবং সৌরভ নামের একজনকে আসামি করেন। মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আজ (রবিবার) ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
জানতে চাইলে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরফুদ্দীন বলেন, কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ রাতেই একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আইনগত সব বিষয়ে আমরা সজাগ থেকে এ হত্যার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট পেলে এই হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় গোলাম কিবরিয়ার (বড় মনির) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ওই কিশোরী। ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্তা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তিনি। পরের দিন (৬ এপ্রিল) দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই কিশোরী। মামলার পর গোলাম কিবরিয়া (বড় মনির) উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন নেন। পরে নিম্ন আদালতে হাজির হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
এদিকে গত ৩০ জুন টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মামলার বাদী কিশোরী। পরে আদালতের নির্দেশে করা ডিএনএ পরীক্ষায় ওই শিশুর পিতা বড় মনির নন বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। পরে গত ৯ অক্টোবর বড় মনিরকে উচ্চ আদালতের জামিন বহাল রাখলে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ধর্ষণের ওই মামলাটি টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিপিআই) তদন্ত করছে।
পিডিএস/আরডি